করোনাভাইরাস নেই যে মহাদেশে

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক : মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো পৃথিবী। তবে ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত হানা দিতে পারেনি সাত মহাদেশের একটিতে। এটি এখনো অ্যান্টার্কটিকার বরফ জমাট তীরে পাড়ি জমাতে পারেনি। এখন মেরু অঞ্চলে ছয় মাসব্যাপী দীর্ঘ শীত আর রাত্রি নামছে, ফলে বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে এ সময়ে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন থাকবে। তাই সংক্রমণের ঝুঁকিও নেই বললেই চলে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত অ্যান্টার্কটিকা, যা একই সঙ্গে এ গ্রহের শীতলতম স্থান। করোনার কোনো সংক্রমণ এখনো সেখানে পৌঁছায়নি। শুরুতে অবশ্য ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি দেখা গিয়েছিল। মেরু অঞ্চলের শেষ গ্রীষ্মে পর্যটকদের নিয়ে আসা একটি ক্রুজশিপে ওই সময় করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। হিমশীতল এ মহাদেশে স্থায়ী বাসিন্দা না থাকলেও পাঁচ হাজারের মতো বিজ্ঞানী ও গবেষক বসবাস করেন।

উদ্বেগভরা কণ্ঠে তারা জানিয়েছেন, ‘আমাদের অবস্থা এখন চাঁদে থাকা নভোযাত্রীর মতো। আমরা দূর থেকে সবকিছুই দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু কিছুই করার উপায় নেই।’

মহাদেশটি নিরাপদ থাকার আরেক কারণ হলো- বৈরী জলবায়ুর কারণে সেখানে স্থানীয় কোনো মনুষ্য বসতি নেই। স্থানীয় বাসিন্দা বলতে আছে পেঙ্গুইন, তিমি, সিল আর আলবাট্রোস নামক পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ ডানার পাখির দল। তাদের সঙ্গেই বসবাস করেন পাঁচ হাজার বিজ্ঞানী ও গবেষক। তারা অ্যান্টার্কটিকায় নানা দেশের ৮০টি ঘাঁটিতে বসবাস করছেন।

অ্যান্টার্কটিকার সর্ব উত্তরে মার্কিন গবেষণা কেন্দ্র পালমার স্টেশন। সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কেরি নেলসন বলেন, ‘এখানে অবস্থান করে নিরাপদ থাকায় সবাই নিজ ভাগ্যের প্রতি কৃতজ্ঞ। এর বিপরীত অনুভূতি কারও মধ্যে হচ্ছে বলে আমার অন্তত জানা নেই।’

তিনি আরও বলেন, এরপরও কিছু কিছু লোক বাড়ি ফিরতে চান। তারা যাদেরকে ভালোবাসেন, এই বিপদের দিনে তাদের সাহায্য করতে চান পাশে থেকে। অন্যরা ইতিহাসের এ দুঃসময়ে নিজেদের বৈজ্ঞানিক সক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীর মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন।

ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন হলেও কেরি নেলসন এবং তার ঘাঁটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা চলমান বিশ্ব মহামারির ওপর সতর্ক নজর রাখছেন।

মহাদেশটির আরেক অস্থায়ী বাসিন্দা হলেন রবার্ট টেইলর। তিনি অ্যান্টার্কটিক উপসাগরের পশ্চিম তীরের অ্যাডেলেইড দ্বীপে অবস্থিত ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক জরিপ ঘাঁটি রথেরা স্টেশনে থাকেন। ২৯ বছরের এ স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা একজন ফিল্ড গাইড।

তিনি বলেন, ‘ছয় মাস আগে আমি যখন প্রথম অ্যান্টার্কটিকা আসি, চীনে একটি নতুন ভাইরাস ছড়িয়েছে- এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হতে থাকে। যুক্তরাজ্যেও সীমিত আকারে সংক্রমণ ছড়ায়। তখন ভেবেছিলাম এটা খুব নগণ্য। তবে করোনার ভয়াবহতা হতাশ করেছে আমাকে।’