কালের কন্ঠ :
কক্সবাজারে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন সৈয়দ আলম নামে এক শিবির ক্যাডার। তিনি কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল গ্রামের মোহাম্মদ কালুর ছেলে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি জামায়াত শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার পাশাপাশি যুদ্ধপরাধী সাঈদী, গোলাম আযম, কাদের মোল্লাসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে নাশকতা সৃষ্টিকারী এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার দায়ে কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে বহিষ্কৃত ছাত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রামু উপজেলার দুর্ধর্ষ এই শিবির ক্যাডার কক্সবাজারে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার রোল নম্বর ১১। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত কনস্টেবল নিয়োগের ৩৮৬ জনের চূড়ান্ত তালিকায় তিনি উত্তীর্ণ হন। এ নিয়ে জেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, সৈয়দ হোসেন নামে এক ছেলে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। উত্তীর্ণ হওয়ার পর জানতে পারি ছেলেটি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয়। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে প্রত্যয়ন করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সৈয়দ হোসেন গর্জনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি এবং পরবর্তীতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কক্সবাজার সরকারি কলেজে পড়াকালীন জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সামনের সারির নেতৃত্বে ছিলেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া তিনি গর্জনিয়া বাজারে ইসলামী ব্যাংকেও চাকরি করেন বলে জানা যায়। তার ফেসবুক আইডিতে এসবের ষ্পষ্ট আলামত রয়েছে।
এদিকে পুলিশের নিয়োগে একজন শিবির ক্যাডারকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রত্যয়ন প্রদান নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় চলছে। দলের গর্জনিয়া ইউনিয়ন কমিটি আগে থেকে দ্বিধা বিভক্ত। এক পক্ষ কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলের অনুসারী এবং অপর পক্ষ তার জ্যেষ্ঠ ভাই ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজলের অনুসারী। উভয় পক্ষ সৈয়দ আহমদকে প্রত্যয়ন দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।
সাংসদের অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফরিদ আহমদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আয়ুব সিকদার। এ কমিটির সভাপতি ফরিদ আহমদ বলেন, পুলিশের নিয়োগে উত্তীর্ণ সৈয়দ আহমদ একজন বড়মাপের শিবির ক্যাডার। আমরা তার সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রত্যয়ন দিইনি। তিনি দেশ ও জাতির জন্য বিপজ্জনক। তার মতো একজন শিবির ক্যাডারকে পুলিশে নিয়োগ দিলে দেশের বড় ক্ষতি হতে পারে।
অপরদিকে সাংসদের বড় ভাই এবং রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল সমর্থিত গর্জনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শংকর শর্মা বলেছেন, আমি তাকে (সৈয়দ আহমদ) প্রত্যয়ন দিইনি। তবে তার আত্মীয় স্বজনরা আমার কাছে তদবির করেছিলেন।
এ বিষয়ে রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামশুল আলম মন্ডল বলেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহাজাহান উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন।