নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন ৭ সেপ্টেম্বর সম্মেলন ; ছাত্রলীগের রাজনীতিতে চাঙ্গা ভাব ও নেতৃত্বের দৌড়ে যারা এগিয়ে
শামীম ইকবাল চৌধুরী : নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন ৭ সেপ্টেম্বর। তারিখ ঘোষণার পর থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। সম্ভাব্য সভাপতি -সম্পাদকদের ছবি সম্বলিত ব্যানার ছেঁয়ে গেছে উপজেলা ও ড়ড়ওয়ার্ডের তৃণমূল পর্যায়ে।
শীর্ষ পদ দুটির একটি নিজেদের দখলে আনতে সিনিয়রদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন অনেকে। এছাড়া সম্মেলনের কারণে নড়ে চড়ে বসেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারাও। দলীয় সূত্র এ তথ্য জানা গেছে।
গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সম্মেলন তারিখ ঘোষণার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রেজা উল করিম।
তিনি বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তিন বছর মেয়াদে অনুমোদন হয় ২০১৯ সালের ১৩ জুন। মেয়াদ উর্ত্তীণ হয়েছে ২০২২ সালের জুন মাসে । দেশে ভয়াবহ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে
ছাত্রলীগের সম্মেলন কালক্ষেপণ করতে হয়েছে। আগামীতে বিভিন্ন আন্দোলন মোকাবেলা এবং সংগঠনকে গতিশীল করতে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। বর্তমান কমিটিতে অনেকের চাকুরী, ছাত্রত্বহীন, প্রবাসে চলে যাওয়া এবং বিবাহিত হওয়ায় এসব মাথায় রেখে জেলার সভাপতি-সম্পাদকসহ আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারনীরা বসে সময় এবং তারিখ নির্ধারন করে ছাত্রলীগ সম্মেলন ঘোষণা দেন ৭ সেপ্টেম্বর।
সূত্র জানায়, এবার সম্মেলনকে সামনে রেখে জেলা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে কয়েক জন নেতাকে নেতৃত্ব বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে নির্ভযোগ্য একটি সূত্রে জানান।
যারা নেতৃত্বের যোগ্যতায় এগিয়ে থাকবে তারা শীর্ষ পদ পাবে। সে ক্ষেত্রে একাডেমিক ও সাংগঠনিক যোগ্যতা, মেধা সম্পন্ন দক্ষ, শিক্ষার্থী বান্ধব এবং দলের প্রতি নিবেদিতরাই এ পদে আসবেন। বিতর্কিতরা যেন এ গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে না পারে সে বিষয়ে তাগিদ রয়েছে জেলার হাইকমান্ড নেতাদের ।
এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনের ক্রিটিক্যাল মুহূর্তে সংগঠন সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবে কি-না এটিও বিবেচনায় থাকবে শীর্ষ স্থানের দুই,টি পদ নিয়ে।
এ বাছাই কমিটির মাধ্যমে উপজেলা কমিটি গঠন হলে বহুদিনের ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট ভেঙে যাচ্ছে’ বলে মনে করেন ছাত্রলীগের সাবেক তৃণমূলের নেতারা।
সাবেক ছাত্রনেতারা বলেন, দীর্ঘদিনের অভিযোগ আওয়ামীলীগের এক নেতা এতদিন ধরে সিন্ডিকেটটি নিয়ন্ত্রণ করতেন। বর্তমান কমিটিতে এসব নেতার আর্শীবাদে অনেক বিএনপি-জামায়াত পরিবারের লোকজনকে পদ পদবীতে বসিয়েছেন বলে আওয়ামী পরিবারের লোকজনদের দাবী। এবার সেখান থেকে বের হতে যাচ্ছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটির সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবি অদৃশ্য সিন্ডিকেট মুক্ত নেতৃত্ব বাছাই হোক ছাত্রলীগের জন্য।
সূত্র আরও জানায়, এবার সংগঠনিক দক্ষতা, ক্লিন ইমেজ এবং মেধাবী ছাত্রদের যাচাই পূর্বক শীর্ষ পদে আসতে পারে।
এছাড়া সভাপতি-সম্পাদক সবসময় সংগঠনের তৃণমূলের কর্মীদের সম্পৃক্ততা সাথে যারা কাজ করতে পারে সেই চিন্তাগুলো বিবেচনায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নেতা উঠছে না উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের তৃণমূল থেকে। তাই এসব এলাকা বিশেষ বিবেচনায় থাকবে। যোগ্য নেতৃত্ব পেলে এসব এলাকা থেকেই শীর্ষ পদে আসীন হতে পারেন কেউ।
দলীয় সূত্রে জানাযায়, সম্ভাব্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নমিনেশন ফরম সংগ্রহ করেছেন সর্বমোট ৩০জন। তৎমধ্যে সভাপতি পদে ১০জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ২০জন। তবে সভাপতি পদের ১জন সরকারী চাকুরী হওয়াতে তার নমিনেশন ফরম বাতিল বলে গান্য করা হয়েছে। বাকী ১৯জন সভাপতি পদে লড়ছেন বলে সূত্রটি জানান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি-সম্পাদক পদে ২৯জন আসীন হওয়ার দৌড়ে যাদের নাম সভাপতি পদে শুনা যাচ্ছে – তারা হলেন, বাইশারী ইউনিয়নের ছালে নূর রিপন, সদর ইউনিয়নের মেহেদী হাসান সানি, রেজাউল করিম, ইরফান মাহাবুব রায়হান, ঘুমধুম ইউনিয়নের বায়েজিদ মুহাম্মদ আরিফ।
আর এদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে শুনা যাচ্ছে, সদর ইউনিয়নের মুমিনুল আলম মুমু, মুহাম্মদ ফয়সাল আজাদ,মহি উদ্দীন মানিক, ঘুমধুম ইউনিয়নের বোরহান আজিজ।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলবে এদের মধ্যে। বাকী প্রার্থীদের তেমন নাম শুনা যাচ্ছে না বলে একাধিক ছাত্রনেতারা জানান।
পদ প্রত্যাশী বলে তাদের একটিভ কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) এ প্রচার করছেন বিভিন্ন রংবেরঙের ফেস্টুন আর ব্যানার।
সংগঠনটির সভাপতি বদর উল্লাহ বিন্দু এই প্রতিবেদকে বলেন, যারা যোগ্য, মেধাবী, নিয়মিত ছাত্র, ভালো সংগঠক তারাই নেতৃত্বে আসবে। দুঃসময়ে যারা ছাত্রলীগের জন্য কষ্ট করেছেন তারাই নেতৃত্বে আসবে। এছাড়াও যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবে, শেখ হাসিনার ভিশনকে বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং আগামী দিনের যে কোনো দুঃসময় মোকাবেলা করতে পার্বত্য মন্ত্রীর বীর বাহাদুর এমপির ভ্যানগার্ড হিসেবে নির্বাচনে নিরলস ভাবে কাজ করতে পারবে এমন যোগ্যতা সম্পন্নরা নেতৃত্বে আসবে।