চার দশকে ১২০ পাহাড় নিশ্চিহ্ন

লেখক: হুমায়ুন রশিদ
প্রকাশ: ৩ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক : দেশে পাহাড় নিধন বা দখল কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। আইন প্রয়োগ করে বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। তাই যেভাবে পাহাড়ের সংখ্যা দিন দিন কমছে, তাতে আমাদের শঙ্কিত হতেই হয়।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে একের পর এক পাহাড় কেটে সাবাড় করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠানও পাহাড় কেটে বহুতল ভবনসহ নানা স্থাপনা বানাচ্ছে। ফলে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে স্থানীয় অধিবাসীকে। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। চার দশক আগে চট্টগ্রামে ২০০টি পাহাড় ছিল, যার ৬০ শতাংশ, অর্থাৎ ১২০টিই ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খালেদ মেসবাহুজ্জামানের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি নিয়মের কারণে পাহাড়খেকোরা প্রত্যক্ষভাবে তাদের কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। কোথাও পাহাড় কাটার পর পরিবেশ অধিদপ্তর যদি তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করে, তা হলে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে পাহাড়ের অবশিষ্ট অংশ কেটে ফেলতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

পরিবেশ আইনে যদি এমন দুর্বলতা থাকে, তা হলে তা দূর করা এবং আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে পরিবেশ ধ্বংসকারী দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ দ্রুতই পাহাড়শূন্য হয়ে যাবে, প্রাকৃতিক বনাঞ্চল বলে কিছু থাকবে না। অপরাধের ব্যাপকতার তুলনায় ন্যূনতম জরিমানা প্রকারান্তরে অপরাধীদের আরও উৎসাহিত করতে ভূমিকা রাখছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। আমরা মনে করি, সার্বিক বিচারে পাহাড় কাটা প্রশ্নে এক ধরনের দায়মুক্তি ও বিচারহীনতাই চলছে। চট্টগ্রামের পাহাড় তথা পরিবেশ রক্ষার জন্যই এর অবসান হোক।