বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার |
মহামারি করোনা ভাইরাসে আজ গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে সকল সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিও। প্রাণঘাতি করোনাকালে শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জের সকল ধর্মের মানুষই অন্তত অনুধাবন করতে পারছে যে- ‘মানব সেবাই পরম ধর্ম।’
এমন দুর্যোগের প্রাক্কালে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের লেমশীখালী গ্রামের প্রান্তিক সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও ‘মানব সেবাই পরম ধর্ম’ বাণীটি বুকে ধারণ করে তাদের মহোৎসবের টাকায় কর্মহীন মানুষের মাঝে মঙ্গলবার ত্রাণ বিতরণ করে দিয়েছে। তাও কেবল সনাতনীদের নয়-মুসলিমদের মাঝেও বিতরণ করা হয়েছে ত্রাণের প্যাকেট।
কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদৌস এ বিষয়ে বলেন, ধূপী পাড়ার বাসিন্দারা তাদের মহোৎসবের টাকায় ৭০টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে মনে করছে তারা এমন কাজটি করেই মহোৎসবের চাইতেও বেশী শান্তি পাচ্ছে।
ওসি জানান, এলাকায় সার্বজনিন শ্রীকৃষ্ণ অদ্বৈত চিন্তাহরি মন্দির পরিচালনা কমিটি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও উৎসব করার জন্য পুলিশের নিকট অনুমতির জন্য যায়। এ দুযোর্গের অবস্থায় পূজার আয়োজন মোটেই সম্ভব নয় বলে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়।
পাড়াটির বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে কিছু ধূপি ও শীল। নিতান্তই দরিদ্র মানুষ সবাই। তারা থানার ওসিকে জানান, উৎসবের জন্য ইতিমধ্যে সম্প্রদায়ের লোকজনের নিকট থেকে অনুদানের টাকা সংগ্রহ করেছেন। যা দাতাদের কাছে পূনরায় ফেরৎ দেওয়াও নিষিদ্ধ।
থানার ওসি এমন সময়ে মানবিক কাজে অংশ নিতে তাদের পরামর্শ দেন। পরে তারা উৎসবের জন্য তোলা ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ৭০টি ত্রাণের প্যাকেট তৈরি করেন। এসব প্যাকেট মঙ্গলবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৭০টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে থানার ওসি, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, মাস্টার নেপাল ধূপী, মেম্বার নুরুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।