টেকনাফ টুডে ডেস্ক |
বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ব্যাখ্যা তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আমরা মনে করি, দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয়ে ত্বরিত পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ এবং এ ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। তবে উদ্বেগের বিষয় হল, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এটি সীমান্তের ৩০০ গজের বাইরে।
অর্থাৎ তিনি অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন। বস্তুত, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী প্রভাবান্বিত সরকারকে বিশ্বাস করার সুযোগ নেই।
অতীতে বহুবার দেশটির উসকানিমূলক আচরণ- যেমন অবৈধ স্থাপনা তৈরি, সেনা মোতায়েন, সামরিক সরঞ্জামাদির উপস্থিতি ইত্যাদি থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়।
সীমান্তে শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণের পেছনে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি দূরে সরিয়ে নেয়া অথবা বাংলাদেশকে উসকে দিয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখার মতো অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সীমান্তে অবৈধ স্থাপনা তৈরি, সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ, সেনা সমাবেশ ইত্যাদির মাধ্যমে মিয়ানমার আমাদের উসকানি দেয়ার চেষ্টা করেছে।
২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সীমান্তে সেনা সমাবেশ ঘটিয়ে এবং আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে উসকানি দেয়ার চেষ্টা করেছে মিয়ানমার। একই ধরনের ঘটনা তারা বিগত কয়েক বছরে রোহিঙ্গা সমস্যা ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যেও ঘটিয়েছে।
তবে তাদের উসকানিতে পা না দিয়ে বাংলাদেশ সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারকে চাপে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবারও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলবের মধ্য দিয়ে কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা চলমান রাখা এবং সীমান্তে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।
একই সঙ্গে দেশটির ওপর রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার করতে হবে। সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে যে, রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করা এবং ভারত থেকে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগের ফাঁকে তাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে দেয়ার দুরভিসন্ধি থাকতে পারে মিয়ানমারের।
আমাদের সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে সীমান্তে উসকানি রোধের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে বাধ্য করা সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস।
