টেকনাফ টুডে ডেস্ক : বুনো হাঁসের উড়াউড়ির ছবি আঁকলেও গবেষকরা শুনেছেন জীববৈচিত্র্যের নতুন গান, দেখেছেন জীবন ফেরার ইঙ্গিত।
বিবিসি জানাচ্ছে, শীতকালে যেসব জলাভূমিতে বুনো রাজহাঁসের বসতি সেইসব জলাভূমির পরিবেশের উন্নতি হওয়ায় ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ওই প্রজাতির সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন গবেষকরা। একই সঙ্গে তারা বলেছেন, তাদের এই পরিবেশের উন্নতির এ চিত্র কয়েক দশক ধরে হুমকির মুখে থাকা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
বিবিসি বলছে, এই প্রজাতির বুনো হাঁস তার ট্রাম্পেটের মতো ডাকের জন্য পরিচিত। তার শীতকালে আইসল্যান্ড থেকে সারা দেশে উড়ে আসে। কিন্তু কয়েক দশক ধরে তার সংখ্যা উল্লেখ যোগ্যহারে কমে গিয়েছিল।
এক্সেটার এবং হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে গত তিন দশক ধরে ১০ হাজার হাঁসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। তারা দেখেন যে, প্রকৃতির সংরক্ষণের কারণে তাদের বেঁচে থাকার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও বিপুল বেড়েছে। গবেষকরা দেখতে পান, জলাভূমির প্রকৃতি সংরক্ষণের নানা পদক্ষেপই রাজহাঁসের বেঁচে থাকার চাবিকাঠি। এর মধ্যে তারা দেখেন, নির্ধারিত জলাভূমির ৩০ শতাংশ বিশেষভাবে ওই হাসের জন্য সংরক্ষণ করার প্রভাব দারুণভাবে পড়েছে। কয়েক দশকের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি রোধ করতে ভীষণ সহায়তা করেছে।
বিবিসি বলছে, এ প্রজাতির রাজহাঁস স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড, উত্তর ইংল্যান্ড এবং পূর্ব অ্যাঙ্গ লিয়ার কিছু অংশে দেখা যায়। তাই গবেষকরা নরফোকের ওয়েলনি, ল্যাঙ্কাশায়ারের মার্টিন মেরে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম স্কটল্যান্ডের ক্যারলাভেরক-এ তিনটি প্রকৃতির সংরক্ষণাগার বন্য রাজ হাঁসদের সররক্ষণ করেন।
এ জন্য তারা শেয়াল এবং অন্যান্য শিকারীকে নিয়ন্ত্রণ করা, চাষাবাদ পদ্ধতি বদল আনা এবং বিদ্যুৎ লাইন এড়িয়ে চলাচল নিশ্চিত করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন।
গবেষক ড. আন্দ্রেয়া সোরিয়ানো-রেডোন্ডো বলেছেন, আমাদের অনুসন্ধানগুলো শক্তিশালী প্রমাণ দেয় যে প্রকৃতির সংরক্ষণগুলো রাজহাঁসের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং যুক্তরাজ্যে তাদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।
তিনি বলেন, এই গবেষণা আমাদের আশাবাদী করছে। জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে নতুন দিশা পাওয়া যাবে এ গবেষণায় পাওয়া ফলাফলের মধ্য দিয়ে। বিষয়টি অনেকটা বুনোহাঁসের ডানায় প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণের গান শোনার মতো।