কক্সবাজারে ভোটার তালিকা হাল-নাগাদ:৭১২৫ আবেদন বাতিল

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক:কক্সবাজার জেলায় ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বাছাইপর্বে ৭ হাজার ১২৫ জনের আবেদন বাতিল করেছে বিশেষ কমিটি। তথ্যগত ভুল, সঠিক ডকুমেন্ট জমা না করা এবং অসম্পূর্ণ আবেদনের কারণে আবেদনগুলো বাতিল করা হয়েছে।
আগামী ১ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর বাতিল আবেদনের আপিল গ্রহণের সময় ঠিক করা হয়েছে ২ থেকে ১৫ জানুয়ারি। ১৬ থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করবে সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিশেষ কমিটি। ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে জেলা নির্বাচন অফিস।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ২৫ জুলাই থেকে সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলে। ৯ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য নেয় নিয়োজিত কর্মীরা। এ সময়ে জেলায় ভোটার নিবন্ধনের মোট আবেদন জমা পড়ে ৫৭ হাজার ৪২৭ জনের। সেখান থেকে যাচাই বাছাইয়ে বৈধতা পেয়েছে ৫০ হাজার ৩০২ জনের আবেদন। বাতিল ঘোষিত হয় ৭ হাজার ১২৫ টি।
এছাড়াও তিনটি ধাপে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার কাজ শুরু হয় ২০ আগস্ট থেকে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলা বাদে বাকী ৭ উপজেলায় ছবি তোলার কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২৬ অক্টোবর সদরের ইসলামপুর ইউনিয়নে ছবিসহ ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হবে। ২৭ অক্টোবর ইসলামাবাদ, ২৮ অক্টোবর ঈদগাঁও, ২৯ অক্টোবর জালালাবাদ, ৩০ অক্টোবর পোকখালী, ৩১ অক্টোবর ভারুয়াখালী, ১ নভেম্বর পিএমখালী, ২ নভেম্বর চৌফলদন্ডি, ৩ নভেম্বর খুরুশকুল, ৪ নভেম্বর ঝিলংজা, ৫ নভেম্বর কক্সবাজার পৌরসভার ১-৫ নং ওয়ার্ড, ৬ নভেম্বর ৬-১০ নং ওয়ার্ড এবং ৭ নভেম্বর ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ডে ছবি তোলা হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। ঈদগাঁও এবং জালালাবাদ ইউপির নিবন্ধন কাজ ঈদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে আর বাকী ইউনিয়গুলোর নিবন্ধন কাজ সংশ্লিষ্ট পরিষদে করা হবে। পৌরসভার নিবন্ধন কাজ করা হবে সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন ও নিবন্ধন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একই সঙ্গে তিনি নিবন্ধন কার্যক্রম সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা-ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি, চৌকিদার ও দফাদারদের রেজিস্ট্রেশন সেন্টারে উপস্থিত থেকে সার্বিক সহায়তা করতে অনুরোধ করেছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসের ১৭ অক্টোবরের আপডেট তথ্য অনুযায়ী, চকরিয়া উপজেলায় নতুন ভোটার নিবন্ধনের আবেদন পড়ে ১২ হাজার ৬৬টি। সেখান থেকে বিশেষ কমিটির সিদ্ধান্তে গ্রহণ করা হয় ১১ হাজার ৮৩৩টি। বাতিল হয় ২৩৩টি আবেদন। একইভাবে টেকনাফে ৫ হাজার ৮৪৭ টি আবেদনের মধ্য থেকে গ্রহণ হয় ৫ হাজার ৩১৩, বাতিল হয় ৬৩৪টি। রামুতে ৬ হাজার ৯০২ আবেদনের অনুকূলে গ্রহণ হয় ৪ হাজার ৮৩২টি। বাতিল হয় ২ হাজার ৭০টি আবেদন।
পেকুয়াতে মোট ৪ হাজার ৬০০ আবেদন পড়ে। বাছাই পর্বে ৪ হাজার ২৬১ জনের আবেদন টিকে। বাতিল করা হয় ৩৩৯টি। উখিয়ায় ৫ হাজার ৫৮টি আবেদন পড়ে। গ্রহণ করা হয় ৪ হাজার ৬৭৮টি। বাতিল হয় ৩৮০ জনের আবেদন। মহেশখালী উপজেলায় ৮ হাজার ২৫৬ জনের আবেদন পড়ে। সেখান থেকে গ্রহণ হয় ৬ হাজার ৬৬৫টি। বাতিল করা হয় ১ হাজার ৫৯২টি। কুতুবদিয়াতে ৩ হাজার ৫২৪ টি নতুন ভোটার নিবন্ধন আবেদনের অনুকূলে গ্রহণ করা হয় ৩ হাজার ২০১টি, বাতিল হয় ৩২৩ টি আবেদন। এসব উপজেলার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজার জেলায় বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৩৯ জন। সেখানে পুরুষ ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৩ এবং মহিলা ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯১৬ জন। আগের ভোটারের সঙ্গে হালনাগাদ হতে যাওয়া নতুন ভোটার যুক্ত হবে। মোট ভোটারের সাড়ে ৩ ভাগ নতুন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকায় স্থান পাবে।
জেলা নির্বাচন অফিসার মো.মোজাম্মেল হোসেন জানান,কক্সবাজার একটি বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় ভোটার করার ক্ষেত্রে খুব সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি ২০০০ বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারী এবং ইতোপূর্বে যারা হালনাগাদে বাদ পড়েছেন তাদের ভোটার তালিকাভুক্তির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল বা ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দন্ডিত ব্যক্তিরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেছে।
তিনি জানান, বিদ্যমান ভোটার তালিকায় কোনো রোহিঙ্গা পাওয়া গেলে প্রমাণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিশেষ কমিটির সিদ্ধান্তে তা বাতিল করা হবে। রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে নির্বাচন কমিশন। তবে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় লোকদের ভোটার হতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বলে স্বীকার করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।