টেকনাফ টুডে ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি রাখাইনে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো অর্থ প্রস্তাব হয়নি বলে দাবি করছে চীন। আজ শুক্রবার এশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রোহিঙ্গারা নিজ ভূমি রাখাইনে ফিরলে তাদের প্রত্যেককে ছয় হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ টাকা) অর্থ সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির এশিয়া বিষয়ক দূত সুন গুঝিয়াং। এর বরাত দিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বেনার নিউজে গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে ঢাকার চীনা দূতাবাসের পলিটিক্যাল ডেস্কের প্রধান ভেরা হু’র সঙ্গে ওইদিন যোগাযোগ করা হলে পরদিন বুধবার এক ইমেইল বার্তায় তিনি চীনের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের টাকা দেবার প্রস্তাব অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভিডিওটি দেখিনি এবং সেখানে ছিলামও না। তবে চীন কখনো রোহিঙ্গাদের অর্থ প্রস্তাব দিতে পারে না।’
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের রাখাইন ফিরে যাবার জন্য চীন কখনো টাকা দেবার প্রস্তাব করেনি, বরং এই টাকা মিয়ানমারের দেওয়ার কথা বলে বেনারকে জানায় ঢাকার চীনা দূতাবাস।’
এদিকে মঙ্গলবার চীনের একটি সরকারি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জনপ্রতি ছয় হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত সহায়তার ওই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন সুন গুঝিয়াং।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) মহাসচিব সায়েদ উল্লাহ জানিয়েছেন, চীন সরকারের এশিয়া বিষয়ক দূত সুন গুঝিয়াং গত ৩ মার্চ কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ১৪ জন রোহিঙ্গা নারী ও ১৫ জন রোহিঙ্গা পুরুষের সঙ্গে আলাপ করেছেন।
বেনার নিউজকে তিনি বলেন, পাঁচ থেকে ছয় হাজার ডলার দিলে আমরা ফিরে যাব কিনা সে বিষয়ে তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। আমাদের নাগরিকত্ব দেয়া না হলে এবং আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়া না হলে আমরা কোনোভাবেই ফিরে যাব না।’
তবে এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।জাতিসংঘের এক হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের বেশ কিছু পুলিশ ও সেনা পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে বাধ্য হয়ে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা।রাখাইনে অভিযানের নামে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, নির্বিচারে গুলি করে রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হয়।
এ ছাড়া সেখানকার নারীদের ধর্ষণ ও গণধর্ষণেরও অভিযোগ উঠেছে সেনাদের ওপর। তবে মিয়ানমারের তরফ থেকে বরাবরই এসব অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। যদি জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করেছে।