বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট
এম.এ আজিজ রাসেল
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভা আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় মহেশখালী ও টেকনাফ উপজেলা। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় মহেশখালীকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার গৌরব অর্জন করে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে উভয় দলই নিজেদের বেস্ট লাইনআপকে মাঠে নামায়। ১৫ মিনিট পর্যন্ত ছিল আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ। তবে এরপর বেশ গুছিয়ে খেলে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের খেলোয়াড়রা। যার ফলশ্রুতিতে গোলে দেখা পায় দলটি। ম্যাচের ১৭ মিনিটে টেকনাফের দিদার শূণ্যে বল পেয়ে ডিবক্সে থেকে দারুণ একটি শটে গোল করে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে নেয়। গোল হজম করে বেশ জ¦লে উঠে মহেশখালীর ফরোয়ার্ডরা। দলকে বিপদমুক্ত করতে তাদের বেশি দেরি লাগেনি। ২৩ মিনিটে মহেশখালী ১০নং জার্সিধারী নাইজেরিয়ান বাবেক কর্ণার শট থেকে বল পেয়ে টেকনাফের জালে বল পাঠিয়ে দেয়। তার গোলে শঙ্কামুক্ত হয় মহেশখালী শিবির। ১-১ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘটে নানা নাটকীয়তা। শুরুতেই আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে মহেশখালী। ম্যাচের ৫১ মিনিটে দলটির ১২ নং জার্সিধারী আবিদ প্রতিপক্ষের রক্ষণ শিবিরের পাহারাদারদের বোকা বানিয়ে একাই ঢুকে পড়ে ডি-বক্সে। এসময় গোলরক্ষক টস দিয়ে আলতোভাবে বল পাঠিয়ে দেয় জালে। এতে মহেশখালীর উচ্ছ্বাস আরও দ্বিগুণ হয়। তবে সেই আনন্দ বেশিক্ষণ ঠিকে থাকেনি তাদের। ৭০ মিনিটে মহেশখালী বিপক্ষে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেয় ম্যাচ রেফারি ছৈয়দ করিম। পেনাল্টি থেকে সহজ গোল করে ২-২ গোলে সমতা ফেরায় টেকনাফের হয়ে খেলতে আসা আরেক বিদেশী খেলোয়াড় রবিন। তবে রেফারির পেনাল্টি দেয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে প্রতিবাদ জানায় মহেশখালীর রিজার্ভ লাইনের খেলোয়াড়েরা। ম্যাচের বাকি ছিল মাত্র ১০ মিনিট। দু’দলই জয়ের স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠে। তবে ৭৫ মিনিটে কপাল পুড়ে ভাল খেলতে থাকে মহেশখালীর। এসময় টেকনাফের ১০ নং জার্সিধারী জাহাঙ্গীর মহেশখালীর গোল রক্ষককে একা পেয়ে সহজ গোল করে ব্যবধান বাড়ায় ৩-২ তে। ৭৭ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে মহেশখালীর ফরোয়ার্ড আরিফ ও আলাউদ্দিন টেকনাফের ডি-বক্সে ঢুকে শট নেয়াকালে রেফারি অফসাইডের বাঁশি বাজায়। রেফারির অফ সাইডের সিদ্ধান্তও ভুল ছিল এমন অভিযোগে কোচ এবং টিম ম্যানেজারের কথায় মাঠ ত্যাগ করে মহেশখালীর খেলোয়াড়েরা। পরে আয়োজক কমিটি ও টেকনিক্যাল কমিটির অনুরোধে পুনরায় ম্যাচ শুরু হয়। কিন্তু মাত্র আর ৪ মিনিটে সমতা আনতে ব্যর্থ হয় মহেশখালী। ফলে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। তবে ভাল খেলে হেরেছে দ্বীপাঞ্চলের খেলোয়াড়রা। এমন গুঞ্জন উঠে গ্যালারিতে। সে জন্য ম্যাচ সেরা পুরস্কারটিও জিতেছেন মহেশখালী উপজেলা দলের ৭নং জার্সিধারী খেলোয়াড় আরমান। খেলা শেষে তাকে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের ট্রফি তুলে দেন জেলা ক্রীড়া অফিসার আফাজ উদ্দিন, টুর্নামেন্ট কমিটির আহবায়ক পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ হেলাল উদ্দিন কবির ও মিডিয়া কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক আহসান সুমন।
টেকনাফঃ ফয়সাল, ইব্রাহিম, তৈয়ব, এনাম, মকবুল, দিদার, এমেকা, জাহাঙ্গীর, রবিন, জেমস, মাইকেল, শেখ আহমদ, শাওন, কাইছার, নুরুল ইসলাম, মনজুর, হানিফ, মামুন, ম্যানেজার জিয়াউর রহমান ও কোচ বাবুল শর্মা।
মহেশখালীঃ সাইফুল, আনোয়ারুল আজিম, মোরশেদ, বাবেক, আরমান, সাইমন, আবিদ, আরিফ, আলাউদ্দিন, আব্বাস, এসফাক, আশেক, সজিব, সোহরাব, ফারুকী, সেকাব, অমিত, আশিষ, শেখ রাসেল, ম্যানেজার ইমরান উল্লাহ ও কোচ শামসুল আলম রনি।
ম্যাচ রেফারিঃ ছৈয়দ করিম, সহকারি রেফারি আনিসুল হক, সুমন দে ও হ্লা হ্লা কিং।
রবিবার (১৭ জানুয়ারী) বিকাল ৩টায় মুখোমুখি হবে সদর উপজেলা বনাম পেকুয়া উপজেলা।