অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বের সেরা শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানের সিস্টার জেফ (৩৯)। ‘গ্লোবাল টিচার প্রাইজ-২০২৩’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা মূল্যে শিক্ষাদানের জন্য স্কুল গড়ে তুলেছিলেন সিস্টার জেফ। বর্তমানে তিনি পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও গুজরানওয়ালার একজন ইংরেজি, উর্দু, সংস্কৃতি, আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের শিক্ষক। ইউনেস্কোর সহযোগিতায় ও সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বিশ্ব জনহিতৈষিক সংস্থা দুবাই কেয়ারসের সঙ্গে কৌশলগত অংশিদারত্বে তার পুরস্কারের আয়োজন করা হয়। ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ৪২তম অধিবেশনের একটি অনুষ্ঠানে বুধবার তার নাম বিজয়ী হিসাবে ঘোষণা করেন অভিনেতা, কৌতুক অভিনেতা ও লেখক স্টিফেন। ‘গ্লোবাল টিচার প্রাইজ-২০২৩’ পুরস্কারের মূল্য ১ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
সিস্টার জেফের জন্ম পাকিস্তানের গুজরানওয়ালায়। অল্প বয়সেই বিনা মূল্যে শিক্ষাদানের জন্য স্কুল খুলেছিলেন তিনি। শিক্ষার্থী জোগাড়ের জন্য এ বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হয়েছে তাকে। সিস্টার জেফ বলেন, শুরুতে তার স্কুলে মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাব ছিল।
শিক্ষাক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের জন্য গ্লোবাল টিচার প্রাইজ দেওয়া হয়ে থাকে। ১৩০টি দেশের শিক্ষক ও শিক্ষাবিদেরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। মনোনয়ন ও আবেদন করেছিলেন ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। উপস্থিত ছিলেন ভারতের দীপ নারায়ণ নায়েকসহ ঘানা, চিলি, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, কানাডা ও ইউক্রেনের বিভিন্ন শিক্ষক। সেখানে সবাইকে পেছনে ফেলে ১০ ফাইনালিস্টের মধ্যে সেরা শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন সিস্টার জেফ।
তবে বর্তমানে নতুন ভবনের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার নানা সুবিধা পায় শিক্ষার্থীরা। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে তার প্রতিষ্ঠানে। ২৬ বছর ধরে তিনি করছেন শিক্ষকতা। এখন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন। গ্লোবাল টিচার প্রাইজ ছাড়াও বিশ্বব্যাপী নানা পুরস্কার পেয়েছেন সিস্টার জেফ।
এদিকে বিশ্বের সেরা শিক্ষকদের এ তালিকায় ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের জামুড়িয়া তিলকা মাঝি আদিবাসী ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক দীপ নারায়ণ নায়েক। তিনি ‘রাস্তার মাস্টার’ নামে পরিচিত। ভারতে করোনাভাইরাসের সময় লকডাউনে বিভিন্ন স্কুলে অনলাইনে ক্লাস চলছিল। কিন্তু দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারছিল না। এ সময় তিনি দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বিভিন্ন আদিবাসী গ্রামে রাস্তায় স্কুল তৈরি করেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াতে শুরু করেন রাস্তার ওপরে। মাটির ঘরের দেওয়াল হয়ে ওঠে তার ব্ল্যাকবোর্ড।