মোঃ আশেকউল্লাহ ফারুকী, টেকনাফ :
বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর উখিয়া-টেকনাফ থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাংসদ আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদী মহান জাতীয় সংসদের বাংলাদেশ মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি নির্মাণে জোরালো বক্তব্য রাখার পর বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়।
২০১৩ সালে টেকনাফ পৌর সভার চৌধুরী পাড়াস্থ নাফ-নদীর তীরে দৈর্ঘ ৯৫০ মিটার প্রস্থ ৪ মিটার ট্রানজি জেটির নির্মাণ কাজের ফলক উম্মোচনের মাধ্যমে কাজের শুভউদ্বোধন করেন, সাংসদ আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদী। এসময় সরকারী উচ্চ প্রদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ট্রানটি জেটির নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল” এবং তদারকীর দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন, স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আফছার উদ্দীন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার ও কার্যসহকারী।
ট্রানজিট জেটিতে ২২২টি পাইলিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। ২০১৩ সালে ট্রানজিট জেটি নির্মাণ দরপত্রে ২৩ কোটি টাকা বরাদ্ধ করার পর, পরবর্তী বছরে এটিকে রিভাইজ করে বর্ধিত করে আরো দশ কোটি টাকা উন্নীত করে মোট ৩৩ কোটি টাকা করা হয়।
বর্ধিত ১০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তা ও অর্ধস্থতন কর্মকর্তাসহ ঠিকাদার মিলে লুটপাঠ করেছে মর্মে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে।
ট্রানজিট জেটি নিমার্ণ কাজ চলতি বছর জুলাই মাসে শেষ হবার কথা।
গত ১৬ জুলাই বিকালে এ প্রতিবেদক বহুল আলোচিত ট্রানজিট জেটির চুড়ান্ত নির্মান কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করতে গেলে, জেটির মধ্যখানে লম্বা লম্বা ফাটল চোখে পড়ে। এমতাবস্থায় দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত এবং সাংসদ আব্দুর রহমান বদীর নির্বাচনোত্তর প্রতিশ্রুত বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন এবং উদ্বোধনের আগেই এটি ফাঠল ধরে।
এর জন্য দায়ী কে? এমন প্রশ্ন আজ গোরপাক খাচ্ছে, টেকনাফের সচেতন মহলের।
জেটি নির্মাণ কাজে অনিয়ম দুর্নীতি সরকারী অর্থ এবং জনগণের প্রদত্ত ট্যাক্সের অর্থ লুটপার্ট করুক আর নাই করুক এবং বিষয়টি শাকদিয়ে মাছ ডাকলে ও দ্বিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, এতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সুশিল সমাজের পক্ষ থেকে দাবী উঠেছে, জনস্বার্থ মূলক এ প্রতিষ্ঠানের অর্থ আতœসাৎকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা প্রকৌশলী আফছার উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটি অতি রুধের কারণে ফাটল ধরেছে। এতে কিছু আসে আর যায়না। তার বক্তব্য বাস্তবতানিরীখে আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়। “যাহা উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ের ন্যায়” পরিস্থিতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তিনি মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে।
ট্রানজিট জেটি নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের সত্বাধিকারী আতিকুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন (০১৮১৯-৪০৫৯৯৭) নাম্বারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেটির কাজ এখনো শেষ হয়নি এটি রিপিয়ার এবল। এর জন্য সিকিয়োরিটি বাবৎ ৩ কোটি টাকা জমা আছে। কাজেই এটি মহাধরতব্য নয়।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জহীর হোসেন এমএ, বলেন, সাংসদ আব্দুর রহমান বদির একান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে ট্রানজিট জেটি নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িতদের তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থার গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।