টেকনাফে দুই ব্যবসায়ী সহোদর আটকের প্রতিবাদে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও টায়ার জালিয়ে ৩ ঘন্টা সড়ক অবরোধ : পুলিশ বলছে ইয়াবা ব্যবসায়ী, এলাকাবাসীর দাবী সম্পৃক্ততা নেই

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ years ago

মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম : টেকনাফ ::
টেকনাফে দুই ব্যবসায়ী সহোদরকে আটকের প্রতিবাদে সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে ও টায়ার জালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে প্রায় ঘন্টাতিনেক যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
২ মে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের খারাংখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় পুলিশ ও এলাকাবাসীর পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
টেকনাফ থানার ওসি মাইন উদ্দীন জানান, ধৃত দুই ব্যক্তি ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত।
অপরদিকে এলাকাবাসীর দাবী সোর্স নামদারী কতিপয় দালালের ইন্ধনে পুলিশ বিকাশ ব্যবসায়ীকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজানোর পায়তারা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২মে ভোররাত ৩টারদিকে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়ার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে বিকাশ ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম (৪০) প্রকাশ ভূলু ও তার বড় ভাই মুদি দোকানদার আবুল কাশেম প্রকাশ কাছিম সওদাগরকে আটক করে।
আবুল কাশেমের স্ত্রী গৃহবধু হালিমা আক্তার দাবী করেন পুলিশ এসময় মহিলাদের ব্যবহৃত ৩ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪২হাজার টাকা ও আব্দুল সালামের বাড়ী থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে যায়।
এলাকায় সোর্স নামদারী কতিপয় দালালের ইন্ধনে নিরীহ ব্যবসায়ীকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজিয়ে হয়রানী করছে এমন অভিযোগী বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এলাকাবাসী। তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও বৈদ্যুতিক খুটি দিয়ে প্রায় ঘন্টাতিনেক সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিক্ষুদ্ধ জনসাধারণ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে। এমতাবস্থায় আতংকে স্থানীয় ব্যবসায়ী দোকান-পাট বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে চলে যায়।
পরে টেকনাফ থানার ওসি মাইনউদ্দীন ও বিজিবি উপঅধিনায়ক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি শান্ত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Teknaf Pic-(A-10)-02-05-17
এই ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার জাহেদ হোছাইন বলেন, ঘটনার রাত থেকে আমি বাইরে রয়েছি। স্থানীয় লোকজন হতে জানতে পারি বিকাশ ও মুদি দোকানদারকে টাকা এবং স্বর্ণালংকারসহ আটক করে নিয়ে যায়। সকালে বিক্ষুদ্ধ জনতা সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করার বিষয়টি জানতে পেরে নিষেধ করার পরও জনতা মানেনি।

হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন,পুলিশ ও দালালদের যোগ-সাজশে দীর্ঘদিনের এই জাতীয় কর্মকান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন আইন-শৃংখলা সভায় বার বার বলা হলেও কোন পদক্ষেপ না থাকায় এই জাতীয় ঘটনার সুত্রপাত। পুলিশ ইয়াবা বিরোধী অভিযানের নামে নিরীহ দুই ব্যবসায়ীদের আটকের জেরধরে জ্বালাও-পোড়াও এবং অবরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় আগামীতে আরো বড় ধরনের সহিংস ঘটনার সুত্রপাত হতে পারে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, পুলিশ দুইজন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আটকের জেরধরে অপর ইয়াবা ব্যবসায়ীরা মিলে সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ-বিজিবির বিশেষ টহলদল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। অভিযানের সময় ধৃতদের হেফাজতে ১৭০ পিচ মতো ইয়াবা সহ প্যাকেটজাতকরণের সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
এঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে ও সড়ক অবরোধসহ বিশৃংখলা সৃষ্টিসহ পুলিশী কাজে বাঁধাদানের অপরাধে দুইটি পৃথক মামলা রুজু করা হচ্ছে।