কক্সবাজার প্রতিনিধি |
কক্সবাজারে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপিবিএন পুলিশের সঙ্গে আরসা সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক জন নিহত এবং পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছে। এসময় অস্ত্র ও গুলিসহ আরসা’র তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের দাবি, নিহত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্টি আরসা’র একজন কমান্ডার।
রোহিঙ্গা ক্যম্পে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন এর সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-৮ ব্লকে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত আব্দুল মজিদ ওরফে লালাইয়া (৩৫) উখিয়ার তানজিমারখোলা ১৩ নম্বর আশ্রয় শিবিরের ই-৩ ব্লকের বাসিন্দা নুরুল আমিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হল- উখিয়ার ঘোনারপাড়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের এ-১৭ ব্লকের মৃত ছৈয়দ হোসেনের ছেলে জামাল হোসেন (২০) এবং একই ক্যাম্পের এ-৮ ব্লকের কাশেম আলীর ছেলে মোহাম্মদ তাহের (৪৫) ও মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ’র ছেলে লিয়াকত আলী (২৫)। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ ও ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে জানায় পুলিশ। তবে ঘটনা আহত পুলিশ সদস্য নাম জানা সম্ভব হয়নি।
এএসপি ফারুক আহমেদ বিকেলে জানায়, সকালে উখিয়ার ঘোনারপাড়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ-৮ ব্লকে জনৈক আমিন মাঝির বসত ঘরের আশপাশে স্থানীয় কয়েকটি ঘরে কতিপয় অস্ত্রধারী লোকজন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছে খবরে এপিবিএন পুলিশের একটি দল উক্ত এলাকায় অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে সন্দেহজনক কয়েকটি ঘর ঘিরে ফেললে জনৈকা হামিদা বেগমের বসত ঘর এবং আশপাশের গলি ও পাহাড় থেকে ৪০ থেকে ৫০ জন আরসা সন্ত্রাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এতে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে আরসা সন্ত্রাসীদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ বাঁধে। গোলাগুলি ও সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আরসা’র সদস্যরা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এপিবিএন পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের পর পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালায়। এ সময় হামিদা বেগমের বসত ঘর থেকে আরসা’র তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পাশের একটি কক্ষ থেকে একজনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় দেশিয় তৈরী একটি বন্দুক ও দুইটি গুলি।
এএসপি জানায়, নিহত আরসা’র কমান্ডার আব্দুল মজিদ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে সংঘটিত ৪ টি হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি। এছাড়া গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ।
