মাহবুব নেওয়াজ মুন্না : হে আল্লাহ সবাইকে বাঁচান। এই পবিত্র রমজান মাসে অপহরণে ক্ষতিগ্রস্তদের আল্লাহপাক রহমত দান করুক, এই প্রার্থনা সবসময়।
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল।
২০২৪ সালের মতো আধুনিক প্রযুক্তিগত জননিরাপত্তার এই যুগে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ন্যায় অতি দুর্গম ও কম লোকজনের এলাকা না হওয়া সত্ত্বেও টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ও বাহারছড়া ইউনিয়নের দরিদ্র ও অসহায় মানুষ বহুবছর ধরে নিত্যনৈমিত্তিক অপহরণের বাণিজ্যের স্বীকার হচ্ছে যা খুবই মর্মান্তিক। তাও একজন গরীব নাগরিক কিভাবে এতগুলো টাকা দিয়ে নিজেকে বন্দিদশা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে? যেখানে দু’বেলা পেটে খাবার যোগাতেই কষ্ট হয়, সেখানে এগুলো দুরাশা।
দেখুন, বান্দরবান-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি এসব অঞ্চলের চেয়ে বহুগুণ লোক দিনেরাতে হ্নীলা ইউনিয়ন এবং বাহারছড়া ইউনিয়নে স্থায়ী বসবাস ও নিয়মিত চলাচল করে। তবু কেন প্রতিনিয়ত গরীব ও অসহায় নাগরিকরা অপহরণ বাণিজ্যের স্বীকার হয়ে কষ্ট পাচ্ছে?
তাই টেকনাফ উপজেলার অপহরণ বাণিজ্য থেকে অসহায়দের বাঁচানোর পরিকল্পনা আরো কার্যকরী হতে হবে।
এসব অপহরণ বাণিজ্য বন্ধের প্রচেষ্টাসরূপ যা যা করা যেতে পারে:
১। প্রথমেই হ্নীলা ইউনিয়ন ও বাহারছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ, Unity is Power অর্থাৎ একতাই শক্তি।
২। টেকনাফ মডেল থানার অধীনে পুলিশ পোস্ট আছে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপে, বাহারছড়া ইউনিয়নে এবং হোয়াইক্যং ইউনিয়নে। কিন্তু হ্নীলা ইউনিয়নে এপর্যন্ত কোনপ্রকার পুলিশ ফাঁড়ি নেই; সুতরাং অতিশীঘ্রই হ্নীলা ইউনিয়নে অন্যান্য ইউনিয়নের ন্যায় জরুরি ভিত্তিতে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা দরকার।
৩। অপহরণ কবলিত এই ইউনিয়নগুলোতে মোবাইল/ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক আরো শক্তিশালী করা যাতে বিশেষ প্রয়োজনে কাজে লাগে।
৪। পাহাড়ি এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপন করা। প্রয়োজনে পাহাড়ের উঁচু জায়গাশ বড় আকারের সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরাসহ ওয়াচ উঁচু টাওয়ার করে স্থাপন করা। (যেমনটি বিজিবির বিওপিতে উঁচু টাওয়ার স্থাপন করে বড় আকারের সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা বসানো হয়েছে)।
৫। টেকনাফ উপজেলার সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর (পুলিশ, র্যাব-১৫ এর ২টি সিপিসি-১ ও সিপিসি-২, ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প, আনসার বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য) জরুরি যোগাযোগের ফোন নম্বর সবসময় সব জনসাধারণের সংগ্রহ করে রাখা, যাতে বিপদের সময় যোগাযোগ করা যায়।
আতংকিত নয়, প্রয়োজন সতর্কতা, সচেতনতা ও ঐক্যবদ্ধতা। নিজেদের সম্মিলিত সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার মানুষও অন্যান্য জেলার মতো সব ভালো উদ্যোগে এগিয়ে তা বাস্তবে প্রমাণ করে দেখান। নিশ্চয়ই আল্লাহ আছেন সাথে।
হে আল্লাহ, সকল অপহরণের স্বীকার মানুষের কান্না কবুল করুন। সকলকে হেফাজত করুন।
জাযাকাল্লাহু খাইরান