টেকনাফে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত যুবলীগ নেতার দাফন সম্পন্ন : সুবিচার নাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৬ years ago

হুমায়ূন রশিদ : টেকনাফে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে শিক্ষানুরাগী,যুবলীগ নেতা, ঠিকাদার ও উন্নয়নকর্মী ওমর ফারুককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এঘটনায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সকাল হতে প্রধান সড়ক অবরোধ করে ভাংচুর চালালে প্রশাসন উপস্থিত হয়ে সুবিচারের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে পোস্টমর্টেম শেষে নিহত ফারুককে সন্ধ্যায় দাফন করা হয়েছে।
জানা যায়,২৩ আগষ্ট সকাল হতে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী উপজেলার হ্নীলা দক্ষিণ জাদিমোরা ও মোচনী এলাকায় শত শত মানুষ প্রধান সড়ক অবরোধ করে রোহিঙ্গাদের ব্যবসায়িক স্থাপনা ভাংচুরের পর যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এই খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবুল মনসুর, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং ক্যাম্পে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রশাসনের লোকজন স্থানীয়দের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার এবং হত্যাকান্ডের সুবিচারের আশ্বাস দিয়ে জনতা অবরোধ তুলে নেয়। এদিকে সচেতনমহল মনে করেন, নিহত ওমর ফারুক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকালে নিজ বাড়িতে রান্না করে রোহিঙ্গাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি নিজ পৈত্রিক জমিতে প্রায় ৫ হাজার পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছেন। তাকে নির্মমভাবে গুলি করে নৃশংশভাবে খুনের ঘটনা রোহিঙ্গা জাতির অকৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।
এই ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, এই ঘটনায় নিহতের পরিবার যাদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করবে পুলিশ সে অনুসারে কঠোর আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবুল মনসুর জানান, গতরাতে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডের জেরধরে সকাল হতে বিক্ষুদ্ধ জনসাধারণ প্রধান সড়ক অবরোধ ও ভাংচুর চালানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এই ঘটনার সুবিচারের আশ^াস দিলে অবরোধকারীরা চলে যায়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ১১টারদিকে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরায় বাজার এলাকায় ঠিকাদারী কাজের ইট অপসারণের সময় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী এবং মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণকারী গডফাদার ডাকাত সেলিম, জকির, সালমান শাহসহ ১০/১২ জনের একটি গ্রæপ মাদকাসক্ত হয়ে স্থানীয় জমিদার আব্দুল মোনাফ ওরফে মোনাফ কোম্পানীর ছোট ছেলে, জাদিমোরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং হ্নীলা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড শাখা যুবলীগ সভাপতি, ঠিকাদার ও উন্নয়নকর্মী মোঃ ওমর ফারুক (৩০) কে ধরে নিয়ে ছুরিকাঘাত এবং বুক ও মাথায় গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর বীরদর্পে পাহাড়ে চলে যায়। পরে স্বজনেরা মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃতদেহ পোস্ট মর্টেমের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে বিকালে ওমর ফারুকের মৃতদেহ পোস্টমর্টেম শেষে বাড়িতে আনা হয়। জানাজা পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, হ্নীলা ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, মরহুমের ভাই ওসমান। এতে বক্তারা প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নাহলে উখিয়া-টেকনাফে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে সকল এনজিওদের কার্য্যক্রম বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের অবরুদ্ধে করে রাখা হবে। মানবতার খাতিরে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে তারা যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবে তা স্থানীয়রা মেনে নেবেনা।
জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এই ব্যাপারে তদন্ত স্বাপেক্ষে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ###