: রাজধানীর পান্থপথে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে চালানো পুলিশের অভিযানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত ‘জঙ্গি’ সাইফুল ইসলামের বাড়ি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার নোয়াকাটি গ্রামে। তার বাবা আবুল খায়ের স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম। সাইফুল খুলনা বিএল কলেজে সম্মান শ্রেণিতে পড়ালেখা করত।
হোটেলে অভিযান শেষে ব্রিফিংয়ে আইজিপি শহীদুল হক বলেন, নিহত জঙ্গির নাম সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া থানায়। তার বাবা একটি মসজিদের ইমাম। ওই জঙ্গিও মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। সে খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ছিল। এক সময় শিবির করত।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিল হোসেনও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর পান্থপথে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে হোটেলে ওলিওতে অভিযান চালায় পুলিশ।
ভোর ৪টা থেকে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের পাশে ওলিও ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই হোটেলটি ঘিরে রাখা হয়।
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের চালানো ‘অপারেশন আগস্ট বাইট’ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
রাজধানীর পান্থপথে বোমা বিস্ফোরণে আত্মঘাতী জঙ্গি সাইফুল ইসলামের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের পুরনো ভবনের চতুর্থ তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাচ্চু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, সাইফুলের লাশ ঢামেক মর্গে এসে পৌঁছায় বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে। এরপর লাশটি জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।
গতকাল সোমবার গোয়েন্দারা তথ্য পান, শোক দিবসে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মিছিলে অংশ নিয়ে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে। এজন্য এক বা একাধিক জঙ্গি ৩২ নম্বরের আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এ ধরনের তথ্য পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় গত ২/৩ দিন ধরে ব্লক রেইড চালায়। সোমবার রাতে দ্বিতীয় দফায় পান্থপথ এলাকায় ব্লক রেইড চালান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশের ব্লক রেইড চলাকালে পান্থপথের হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের অন্যান্য কক্ষের অতিথিরা দরজা খুলে দিলেও ৩০১ নম্বর কক্ষের দরজা খোলেনি বলে জানান কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তখন ব্লক রেইডে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যরা ওই কক্ষের দরজা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন।
এরপর সকালে পুলিশ বার বার আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি সাইফুল। বেলা পৌনে ১০টার দিকে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অভিযান চলাকালে সোয়াট সদস্যদের গুলি ও নিজের সঙ্গে থাকা বোমার আঘাতে নিহত হয় সাইফুল। এরপর ঘটনাস্থলে ক্রাইম সিনের কাজ শেষে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সাইফুলের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।