প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে যাবে বাংলাদেশ-প্রতিমন্ত্রী এনামুর

লেখক: হুমায়ুন রশিদ
প্রকাশ: ৩ years ago

মুহাম্মদ হানিফ আজাদ : সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান এমপি বলেছেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের অবশ্যই তাদের দেশে প্রত্যাবাসন করা হবে। এ ব্যপারে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়ে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। উখিয়া টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের যতদিন প্রত্যাবাসন করা হচ্ছে না ততদিন তাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে যাবে বাংলাদেশ সরকার।
প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ায় ‘ইউএনএইচসিআর’- নির্মিত বিশেষায়িত হাসপাতাল উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি জানান, উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গাদের চাপ কাটাতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসান চরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩১ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। ভাসান চরে স্বেচ্ছায় যারা যেতে চায় তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা অবস্থানের কারনে কক্সবাজারের স্হানীয় জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সংকটে না পড়ে এ কারণে ‘ইউএনএইচসিআর’- জাপানি সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই হাসপাতালটি স্হাপন করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান, ‘ইউএনএইচসিআর’Plus কান্ট্রি ডিরেক্টর মি জোহান্স ভেন ডার ক্লাউ, শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা মিরজাূদী সাব্রিনা ফ্লোরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজিব উখিয়া সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ তাজ উদ্দিন উখিয়া উপজেলা আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী প্রমুখ ।

৩০ জুন ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রিপক্ষীয় এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি এবং ইউএনএইচসিআর এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইয়োহানেস জঁন ডার ক্লাউ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এসময় কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) (অতিরিক্ত সচিব) শাহ রেজওয়ান হায়াত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মধ্যম পর্যায়ে অসুস্থ ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এই বিশেষায়িত হাসপাতালটি কাজ করবে। বহিরাগত রোগীদের পরিষেবা প্রদান, যেমন-সার্জারি, ট্রমা কেয়ার, চক্ষু ও দাঁতের যত্ন, ফিজিওথেরাপি এবং উপশমকারী চিকিৎসা সেবার জন্য এই হাসপাতালে সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও ২৪ঘন্টা/৭দিন সার্বক্ষনিক জরুরী ইউনিট, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি এবং ডায়াগনস্টিক সুবিধা রয়েছে এই বিশেষায়িত হাসপাতালে।

সমঝোতা স্মারক অনুসারে, হাসপাতালটি তৈরি করতে, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করতে এবং কর্মীদের প্রাথমিক খরচ প্রদানে অবদান রাখবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।এছাড়া এই হাসপাতালের চিকিৎসা ও প্রশাসনিক সুবিধা প্রদানে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বেসরকারি সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল এবং অরবিস। এই বিশেষায়িত হাসপাতালে ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, স্বাস্থ্য কর্মী, টেকনিশিয়ান সহ শতাধিক লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।