‘অচিরেই রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাত ধরা পড়বে’..টেকনাফে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী সমাবেশে জেলা পুলিশ সুপার

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ years ago

মো.শহীদ উল্লাহ, টেকনাফ ::
টেকনাফে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী সমাবেশে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ডঃ একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘অচিরেই রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম ধরা পড়বে। এতে জনগনকে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগীতায় এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ জনগনের সাথে আছে এবং থাকবে। জনগনও যদি আন্তরিকভাবে পুলিশের সহযোগীতায় এগিয়ে আসে তাহলে হাকিম ডাকাতসহ যত বড় অপরাধী হউক না কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব।’ এসময় তিনি সভায় উপস্থিত জনতাকে সন্ত্রাস এবং মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হতে হাত তুলে ওয়াদাবদ্ধ করান।
৭ মার্চ বুধবার বিকাল ৩ টায় টেকনাফ উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তবে উপরোক্ত কথা বলেন।

সন্ত্রাস ও মাদক প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুল বশরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) চাউ লাউ মারমা, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিত কুমার বড়–য়া, সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন। যুব নেতা নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কাউন্সিলর আবু হারেছ, রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম কর্তৃক নির্যাতিত স্থানীয় বাসিন্দা নুর কবির, মনির আহমদ, জহির আহমদ, লায়লা বেগম প্রমুখ।

এতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা হাফেজ ‍উল্লাহ, টেকনাফ পৌর আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক মো. আহমদ বাহাদুর, সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক গুরা মিয়া।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, এই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যাওয়া আবদুল হাকিম ডাকাত একজন মিয়ানমার নাগরিক। কিভাবে সে দীর্ঘদিন যাবৎ গুম, খুন, সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। নিশ্চয় কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির আর্শিবাদপুষ্ট হয়ে সে এই সন্ত্রাসী কাজ করেই চলেছে। দীর্ঘদিন পর হলেও স্থানীয় জনগন সোচ্চার হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীকে সহযোগীতা করলে সে ধরা পড়তে বাধ্য হবে। এলাকায় যারা এখনো এ কুখ্যাত ডাকাতকে সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে তাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা দরকার।
কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, হয় পুলিশ থাকবে, না হয় ডাকাত থাকবে। তিনি আরো বলেন, অপরাধীদের কিভাবে নির্মূল করতে হয় পুলিশের জানা আছে। জনগন সহযোগীতা করলে কোন সন্ত্রাসী, ডাকাত এলাকায় থাকবেনা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) চাউ লাউ মারমা এলাকার জনসাধারনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা শুধু তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করুন। সন্ত্রাসীদের নির্মূলে পুলিশের যা করা দরকার তাই করবে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিত কুমার বড়–য়া, মাদক, সন্ত্রাস ও ডাকাতের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। পুলিশ আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে। হাকিম ডাকাতের কথা অনেক শুনেছি। জনগন সহযোগীতা অব্যাহত রাখলে নিশ্চয় সে ধরা পড়বে।

সভাপতির বক্তব্যে নুরুল বশর আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সহকর্মী সিরাজুল হক মেম্বারকে নৃশংসভাবে ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে এই কুখ্যাত হাকিম ডাকাত। শুধু তাই নই, তার হাতে একে একে খুন-গুম হয়েছে যুবলীগ নেতা নুরুল কবির, পুলিশের সোর্স মুন্ডি সেলিম, তোফাইল ও নুর হাফেজসহ অনেকে। নির্যাতিত হয়েছে অনেক নিরীহ মা-বোন। তার ভয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছে শতাধিক পরিবার।
teknaf pic 7 03 18 sp2 Copy TEKNAF TODAY - সীমান্তের সর্বশেষ খবর
এদিকে টেকনাফের শহীদ মিনার চত্বরের সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী সমাবেশটি ডাকাত হাকিম বিরোধী এলাকার নির্যাতিত ও প্রতিবাদী জনতার সমাবেশে পরিণত হয়েছিল। সভাস্থলে ওই হাকিম ডাকাতের হাতে খুন-গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে সভাস্থলে উপস্থিত হয়।

উল্লেখ্য, টেকনাফের নেটং পাহাড়ে আস্থানা গেড়ে বেশ কয়েক বছর ধরে খুন, গুম, অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করে আসছে রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাত। তার বিরুদ্ধে খুন-গুম সহ ডজনের বেশী মামলা রয়েছে ।