৪৮ থেকে ৪৯ এ পা দিল লাল সবুজের আমার সোনার বাংলাদেশ

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

পিকলু দত্ত : বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় টেকনাফে মহান বিজয় দিবস- ২০১৯ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। দিবসের প্রথম প্রহরে উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্প স্তবক অর্পন করেন উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিকবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও ছাত্র সংগঠনসমূহ। সকল সরকারী, বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্ব-স্ব দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন গঠনাবলীর ছবি সম্বলিত দেওয়ালিকা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে আটটায় উপজেলা কমপ্লেক্স আদর্শ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সফল প্রতিবন্ধীদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন টেকনাফ থানা পুলিশ, আনসার, টেকনাফ হাইস্কুল, টেকনাফ গার্লস হাইস্কুল, মলকাবানু হাইস্কুল, রিয়াদুল জন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা, মায়মুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপজেলা কমপ্লেক্স আদর্শ স্কুল, বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুলসহ আরো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্বর্ধনা প্রদান ও স্মার্ট কার্ড প্রদান এবং সফল প্রতিবন্ধীতের হাতে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
এবারে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, সফল প্রতিবন্ধীদেরকে সংবর্ধনা, মাঠ ব্যবস্থাপনা, আলোকসজ্জাসহ উপজেলা পরিষদকে সাজানো থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ছিল আন্তরিক উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া।
প্রতিবন্ধীদের সম্মাননা প্রদান : প্রথমবারের মতো কোন জাতীয় দিবসে টেকনাফের প্রতিবন্ধীদের সম্মননা ক্রেস্ট দেয়া হয়েছে। প্রতিবন্ধী হওয়া স্বত্ত্বেও অন্যের কাছে হাত না পেতে স্ব-নির্ভরশীল হয়ে পরিবারের হাল ধরেছে এমন ১০ জনকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা ও উপহার তুলে দেওয়া হয়। এসময় নিজের অনুভুতি ও আত্মনির্ভরশীলের গল্প তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধী মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, সরকারি লোন নিয়ে মুরগীর খামার করে প্রতিমাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করছেন। এতে তার সংসার ভালই যাচ্ছে। তাকে অন্যের নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়না। এভাবে সকল প্রতিবন্ধীকে আত্মনির্ভরশীল হয়ে কাজ করারও আহবান জানান তিনি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার নুুরুল আবছারে সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন, টেকনাফ মডেল থানা ওসি (অপারেশন) রাকিবুল হাসান, কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধাকালীন কমান্ডার আইউব বাঙ্গালী প্রমুখ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, হাতে আলোক বর্তিকা নিয়ে অন্ধকারকে দূর করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। এখনো এদেশে পাকিস্তানি দোসররা ঘাপটি মেরে রয়েছে। সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নীত করে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিতাড়িত করতে হবে। এই হউক বিজয় দিবসের শপথ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, টেকনাফে বর্ধ্যভুমি রয়েছে বলে জেনেছি। এটি সঠিক ভাবে দ্রুত সময়ে সংরক্ষন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি একটি সুন্দর টেকনাফ গড়ে তোলার জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
পরে ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের পুরষ্কার বিতরণ ও অতিথিদের সম্মাননা উপহার দেওয়া হয়।
এছাড়াও কর্মসূচীতে রয়েছে বিকাল ৩টায় প্রীতি ফুটবল টূর্ণামেন্ট ও সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে আগত শিল্পীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান।
এদিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দল, শিক্ষা ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালন করেছেন।