২৩ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে টেকনাফ স্থল বন্দরে সমস্যা জর্জরিতঃ ব্যবসায়ীরা হয়রানীর শিকার

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ years ago

বিশেষ প্রতিনিধি, টেকনাফ :
টেকনাফ স্থল বন্দর “পরিচালনাকারী ইউনাইটেড ল্যান্ডপোর্ট” একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্টানটি ২৫ বছরের জন্য “টেকনাফ স্থল বন্দর” ইজারা নেয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটেনী। চুক্তির শর্তানুযায়ী দু-দেশের ব্যবসা বাণিজ্য এবং আমদানি ও রপ্তানী কারকদের স্বার্থে স্থল বন্দরে প্রতি অর্থবছরে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের কথা থাকলেও “ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট” কর্তৃপক্ষ এর ধীরনীতিতে বিশ্বাসী। ফলে স্থল বন্দরের সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসায়ীরা এ ব্যবসা থেকে মূখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কেননা ব্যবসায়ীরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবসা করছে, তাতে তাদের সুফল বয়ে আনছেনা। বরং ব্যবসায়ীরা বা পদে পদে স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে নীরবে হয়রানীর শিকার হয়ে আসছে। এক কথায় ব্যবসাযী ওদের কাছে জিম্মি। এখানে ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন স্বাধীনতা নেই। পরাধীনতা গ্লানী নিয়ে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা করে আসলেও আতœতৃপ্তি নেই।

১৯৯৫ সালে ৫ অক্টোবর টেকনাফ পৌর এলাকা চৌধুরী পাড়া কায়ুকখালী খালের তীরে স্থল বন্দরের কার্যক্রম শুভ শুচনা হয়।

এর পর ২০১৩ সালে কেরুনতলীতে এটি স্থানান্ত্ররিত হয়।

প্রায় ২৩ একর সরকারী জায়গার উপর বিভিন্ন অবকাঠামো অন্যান্য স্থাপনা জেটিগড়ে উঠলেও ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবী বসার স্থান এবং অর্থ লেনদেনের জন্য ব্যাংক শাখা স্থাপিত হয়নি।

এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা এ সমস্যা এবং ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ব্যবসা করে আসলেও তাদের ন্যায্য আরোপিত দাবী নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেনা। শুধু মাত্র আশ্বাসের বাণী শুনাচ্ছে।

যে সমস্যা আজ জর্জরিত উন্নতমানের জেটি, পণ্য উঠানামা করার জন্য ক্রেন, ব্যবসায়ীদের বসার স্থান, হোটেল রেস্তোরা শ্রুমিকদের জন্য বিনোদন, অফিস, ব্যাংকশাখা, ইমেগ্রেশান দিয়ে ব্যবসায়ীদের মিয়ানমারে যাতায়াতের উন্নত মানের জলযান, ইত্যাদি।

বাংলাদেশে দু-দেশের সীমান্ত পর্যায়ে ১৪টি স্থল বন্দর রয়েছে তার মধ্যে টেকনাফ স্থল বন্দর অন্যতম একটি। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ ও পূর্বে মিয়ানমার সীমান্ত পর্যায়ে অর্থতৈনিক সম্ভাবনাময় একটি স্থল বন্দর।

এ স্থল বন্দর থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা সরকারী রাজস্ব পাচ্ছে।

২০১৬-২০১৭ গেল অর্থ বছরে ১১৫ কোটি রাজস্ব আয় করে অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। ইয়াবা ব্যবসা এবং প্রভাবশালীদের প্রভাব বিস্তার এবং স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের পদে পদে অতিরিক্ত চার্জ এবং চাঁদাবাজীর কারনে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে ।

জানা যায়, স্থল বন্দরের প্রায় শ্রুমিক মিয়ানমারের নাগরিক। একাদিক সূত্র থেকে জানা যায়, কোন কোন শ্রুমিক পরিচালনাকারী মাঝি ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। বর্তমানে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে ও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) বিকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( গবেষনা অধিশাখা) টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বন্দরের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আমদানী রপ্তানী পণ্যে আগে সহজীকরণকে সামনে রেখে বিনিয়োগ প্রসারের জন্য এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (গবেষনা অধিশাখা) উপ-সচিব সনজয় চক্রবর্তী (পিএইচডি), চট্টগ্রাম কাষ্টমস্ ও ভ্যাট এর উপ-কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, টেকনাফ কাষ্টমস্ কর্মকর্তা এ,এস,এম মোশারফ হোসেন, সেলিম, ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দীন, সোনালী ব্যাংক টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ ওসমান, স্থল বন্দর ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মোঃ হাশেম, মোঃ সোহেল, মোঃ জোয়েল, মোঃ সেলিম, নাছির উদ্দিন, শওকত আলম, যদুবাবু, কামরুল ইসলাম, আব্দুল জব্বরসহ অনেকেই।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ হাশেম, সোহেল ও অন্যান্য ব্যবসায়রিা অভিযোগ করেন, ১৪ বছর ধরে টেকনাফ স্থল বন্দর কর্তৃৃপক্ষ ব্যবসাযদের জিম্মি করে এবং পদে পদে হয়রানী ও অতিরিক্ত বন্দর চার্জের নামে ব্যবসায়ীদের উপর গলাকাটা বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা আমদানী ও রপ্তানী কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়্ াঅভিযোগে তারা আরো বলেন, আমদানী রপ্তানী পণ্যে পরিমাপ করার স্কেল যেন নাইট ফির আওতায় আনা বন্দ করা, পর্যাপ্ত পল্টুনের অভাব, অফিসিয়াল সময়ের বাইরে অতিরিক্ত চার্জ আদায়, স্কেল সংকট, নদীতে থাকা জাহাজ ও মালামাল ভর্তি করা ট্রাক থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া, এলসি সমস্যা সমাধানের দাবী জানান। ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, ইউনাইটেয ল্যান্ডপোর্ট স্থল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৪ বছর ধরে নাফ-নদী খননের নামে ফিঃ প্রতিটন মালামালে নদী খননের নামে ৭৯ টাকা চার্জ আদায় করে আসছে। এ পর্যন্ত তারা নদী খনন করতে দেখা যায়নি। স্বাভাবিক প্রশ্ন এটাকাগুলো গেল কোথায়ঃ এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ভাংগা জেটি দিয়ে মালামাল উঠানামা, ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট, ভ্যাট রশিদ, রশিদ না দিয়ে টাকা আতœসাৎ, শ্রুমিকের বখশিস নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়, পঁচনশীল পণ্যের চারদিনের ফিঃ মওকুফ না করা ও পঁচনশীল বণ্যে বাড়তি ফিঃ আদায় ও বিবিধ ফিঃ নামে চার্জ নেওয়াসহ কাঠ অনুমতিতে বনবিভাগের হয়রানী বন্ধ করার দাবী জানান ।