সাদ্দাম হোসাইন : হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় বাণিজ্যের রেশ না কাটতে পেয়ারা বাগান হতে আরো ১জনকে অপহরণ করা হয়েছে। পানখালী এলাকা হতে অপহৃত পিতা-পুত্রকে ৬লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো না হওয়ায় পাহাড়ি জনপদের গ্রাম সমুহে অপহরণ আতংক অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, ১লা অক্টোবর সকাল ১০টারদিকে উপজেলার হ্নীলা মরিচ্যাঘোনার মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র মোঃ শফিক (৩০) পাহাড়ি ঘোনায় নিজের পেয়ারা বাগান দেখতে যায়। এসময় একদল দূবৃর্ত্ত তাকে অপহরণ করে পাহাড়ে ভেতরে নিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী অপহৃতের পরিবার সুত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে দুপুর ২টারদিকে ঘরের ৪টি গরু,বসত-ভিটা বন্ধক, স্থানীয় মেম্বারসহ বিভিন্ন জনের নিকট হতে ধার-কর্জ্জ করে সংগ্রহ করা ৬লাখ টাকা নিয়ে হ্নীলা পানখালী-বাহারছড়া ঢালাপথের ঢলবইন্যা নামক পয়েন্টে গিয়ে মুখোশধারী অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের বুঝিয়ে দিয়ে গুরুতর আহত ও মুমুর্ষাবস্থায় পশ্চিম পানখালীর মৃত উলা মিয়ার পুত্র নজির আহমদ (৫৫) এবং নজির আহমদের পুত্র মোঃ হোছন (২৫) কে উদ্ধার করে বাড়িতে আনা হয়। তাদের সন্ধ্যারদিকে হ্নীলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক মোঃ রফিকুল ইসলামের নিকট চিকিৎসা নিতে আসে। এসময় তারা বলেন, অপহরণকারীরা মুখোশধারী হওয়ায় কাউকে চিনতে পারেনি। গত ৩দিনের মধ্যে শুটকি দিয়ে ৩বেলা খারাব দিয়েছে। যতবার বাড়িতে টাকার জন্য ফোন করেছে ততবার মেরে অজ্ঞান করেছে। যা প্রকাশ করার ভাষা আমাদের নেই।
ডাক্তার রফিকুল ইসলাম জানান, ভিকটিমেরা খুবই গরীব এমআরআই করতে পারেনি। এক্সরে করেছে তাতে দেখা যায় হাঁড় না ভাঙ্গলেও মাংস কাল হয়ে গেছে। তাদের কমপক্ষে ৩মাসের বিশ্রাম দরকার।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার হোছাইন আহমদ বলেন,এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় কেউ এই অপহরণ চক্রের সাথে জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হবে। এই অপরাধী চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সজাগ থাকতে হবে। পাশাপাশি আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে।
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান,গত কয়েকদিন ধরে প্রত্যন্ত এলাকায় যা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক। আপাতত তা থেকে বাঁচতে এলাকার মানুষকে সংঘবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার টহল জোরদারের পাশাপাশি স্থানীয় কেউ এই ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।
সাধারণ মানুষের ধারণা, প্রত্যন্ত এলাকায় আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার না থাকায় স্থানীয় কতিপয় মুখোশধারীদের ইন্ধনে দূবৃর্ত্তরা এসব অপতৎপরতা চালিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে তুলেছে। এলাকা ভিত্তিক অপরাধ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সমন্বয়ে তদারকি থাকলে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়া অপরাধ প্রবনতা কমতে পারে বলে ধারণা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভোররাত সাড়ে ৩টারদিকে একটি স্বশস্ত্র গ্রæপ মরিচ্যাঘোনার পশ্চিমে পাহাড়ে ধান চাষ পাহারা দেওয়ার সময় স্থানীয় আবুল মঞ্জুরের পুত্র মোঃ শাহজাহান (৩৫), ঠান্ডা মিয়ার পুত্র আবু বক্কর (৪০) এবং আবু বক্করের পুত্র মেহেদী হাসান (১২)কে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। কিন্তু পাহাড়ে স্বশস্ত্র দুপক্ষ মুখোমুখী হলে একপক্ষ আরেক পক্ষকে ধরতে এসেছে সন্দেহ করে গোলাগুলিতে লিপ্ত হলে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় ফিরে এসে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ###
