হোয়াইক্যংয়ে চলাচলের রাস্তা বিরোধ নিয়ে ইট-পাটকেল হামলা ; হাসপাতালে নেওয়ার পথে বৃদ্ধের মৃত্যু

: হুমায়ুন রশিদ
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

সাদ্দাম হোসাইন : হোয়াইক্যংয়ে চলাচলের রাস্তা বিরোধ নিয়ে সালিশ চলাকালে তর্কতর্কির জেরধরে এক বৃদ্ধের উপর সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে হাসপাতালের পথে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

জানা যায়, ৯ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টারদিকে উপজেলার হোয়াইক্যং নয়াপাড়ার হোছন আলীর পুত্র আব্দুস সালামের উঠানে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি চলাচলের রাস্তা বিরোধ নিয়ে আব্দুস সালাম (৬৫) গং এবং মৃত ঠান্ডা মিয়ার পুত্র আব্দুস শুক্কুর (৬৮) গংকে নিয়ে বৈঠকে বসার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় হঠাৎ উভয়পক্ষের মধ্যে তর্ক ও কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আব্দুস শুক্কুর গং হঠাৎ টিলার উপর ভিটা হতে আব্দুস সালাম গংকে লক্ষ্য করে ইটের টুকরো মারতে শুরু করে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে শোর-গোল শুরু হয়। শুক্কুর ইট মারার সঙ্গে সঙ্গে তারই পরিবারের পারভীন (২৩), লাকি (১৮), শাকিল (১৪), আব্দুল্লাহ (২৫), বাদল করিম ও তার স্ত্রী মসছফা মিলে আব্দুস সালাম ও তার পরিবারের সদস্যদের টিলার উপর থেকে ইট-পাটকেল হামলা করে বৃদ্ধ আব্দুস সালাম রক্তাক্ত এবং আব্দুস সালামের প্রতিবন্ধি ছেলে হারুন অর রশিদ (১৮) ও মেয়ে মনিরা বেগম (১২) আহত হয়। পরে বাড়ির লোকজন রক্তাক্ত বৃদ্ধ আব্দুস সালামকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হ্নীলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে। অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় সেখানে কর্মরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে পৌঁছানোর পূর্বে সকাল সাড়ে ৯টারদিকে রক্তাক্ত বৃদ্ধ আব্দুস সালাম মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ৬সন্তান এবং ৩ মেয়ের জনক। তম্মধ্যে ৫ ছেলে প্রবাসে রয়েছে।

এই ঘটনা টেকনাফ মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য থানায় নিয়ে যায়। বিকালে মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে টেকনাফ থানায় একটি এজাহার দাখিলের প্রস্তুতি চলছে বলে জানানো হয়েছে।

এই ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ ওসমান গণি জানান,এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।এবং লাশটি টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এরপর ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য,এই চলাচলের রাস্তা নিয়ে পূর্বেও বিরোধ হওয়ায় স্থানীয় মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা কয়েক দফা সালিশে বসে। কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ায় সমাধান হয়নি। সর্বশেষ গত ৮ডিসেম্বর সকাল ১১টা হতে বিরোধীয় জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেমে থেমে ঝগড়া শুরু হয়। রাত ৮টারদিকেও দুপক্ষের মধ্যে এই রাস্তা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পুনরায় সকালে ৩য় দফায় কথা কাটাকাটি হলে স্থানীয় কয়েকজন সালিশকারক বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং গালমন্দের কারণে হামলার সুত্রধরে এই নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় শান্তিপ্রিয় মানুষ সামান্য একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুণের ঘটনা সৃষ্টিকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী উঠেছে। ###