হাতুড়ে ডাক্তার বিমল’র সেবার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা !

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ years ago

খাঁন মাহমুদ আইউব, টেকনাফ :
কক্সবাজার’র টেকনাফ হাতুড়ে ডাক্তার বিমল এর ডাঃ বি,কে রুদ্র বিজ্ঞাপনের আড়ালে লিখিত ব্যবস্থা পত্র ছাড়া নিম্ন মানের আন্টিবায়োটিক ও ইঞ্জেকশন ব্যবহারের জন্য প্রষিদ্ধ। ভুড়িভুড়ি মেডিসিন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চিকিৎসক। তার(এলএমএফ) সার্টিফিকেটের ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলেন স্থানীয় ক’জন পল্লী চিকিৎক। কয়েকটি সি গ্রেডের মেডিসিন কোম্পানী থেকে মাসিক উৎকুচ নিয়ে চুপিসারে বিক্রয় প্রতিনিধির মতো দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

সরেজমিন অনুসন্ধান শেষে খোঁজ মেলে কয়েক জন পল্লী চিৎসকের যারা সেবার নামে প্রতারণা করে যাচ্ছেন গ্রামের সহজ সরল মানুষদের সাথে।

তেমনেই একজন পৌরসভার লেঙ্গুরবিল সড়কের বিমল বাবু। তিন জন কর্মচারী কিন্তু ততোবেশী মেডিসিনের সমারোহ নেই দোকানে।বর্তমানে তিনি ডাঃ বি কে রুদ্র (এলএমএফ)। দেখা গেলো রোগীদের ভিড় তার মধ্যে অধিকাংশ অশিক্ষিত গ্রাম্য মহিলা এবং শিশু। এতো রোগীরর ভীড় আদ্যোপান্ত তালাশে তথ্য পাওয়া গেলো ফ্রি’তে চিকিৎসা, শুধু মেডিসিনের টাকা নিয়ে থাকেন তিনি। ফার্মেসীতে সময় ধরে বসে যে চিত্র দেখা গেলো তা অশিক্ষিত মানুষের চোখে ধুলা দিয়ে ধান্ধা করার ফাঁদ পেতে বসেছেন তিনি। ভিজিট ১শ টাকা না নিয়ে কৌশলে তার দ্বিগুন হাতিয়ে নিচ্ছেন।

সিনেমা হলের আশপাশে এলাকার এক রোগী, রিপোর্টে টাইফয়েড ধরা পড়েছে সপ্তাহ খানেক আগে।তার দোকানের এক কর্মচারী সেফট্রাজন ওয়ানগ্রাম এন্টিবায়োটিক পুশ করছে আর রোগীটি অসহনীয় আচরন করছে। অথচ এদের জানানেই যে কোন ইঞ্জেকশন কত ধীরে রোগীর শরীরে প্রবেশ করাতে হবে এবং এর কারন কি?

একই চিত্র ক্যানোলা লাগানো একটি শিশুর বেলায়।অপরদিকে এইসব অন্টিবায়োটিক, ল্যাব টেষ্ট, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করার বৈধতা কতটুকু জানতে চাইলে, তিনি ১৪ বছর ডাক্তারী করার অভিজ্ঞতাকে পুঁজি হিসেবে তুলে ধরলেও তার প্রোফাইল খোঁজ করে জানা গেছে,শুরুর দিকে টেকনাফ বাস স্টেশন এলাকায় নজির হাজী মার্কেটে এক ফার্মেসীতে চাকুরী নেন। পরবর্তিতে অন্য ফার্মেসীতে চাকুরী পরিবর্তন করে লেঙ্গুর বিল সড়কে চলে আসেন। এদিকে স্থানীয় এক চিংড়ি ব্যবসায়ী সুরেজ বাবুর কাছ থেকে যৌতুক মূলে মেয়ে বিয়ে করে ডাক্তারী খেতাব জুড়ে রাতারাতি এস আর ফার্মেসী নামে ব্যবসা শুরু করেন। বিগত ৬ বছর ধরে তিনি মুখোশধারী চিকিৎসক বনে চিকিৎসা নামে প্রতারণা শুরু করেছেন।

যদিও তিনি ১৯৯৩ সালে এলএমএফ কোর্স সম্পন্ন করেছেন বলে দাবী করেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উক্ত ফার্মেসীতে কোন নামী কোম্পানীর মেডিসিন নেই। রোগীদের এইসব নিম্নমানের মেডিসিন ধরিয়ে দিয়ে স্কয়ার, বেক্সিমকো, স্কেইফ, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল’র মতো মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছে। যা সম্পূর্ণ ভোক্তা অধিকার আইন লংগন বলে বিবেচনা করা যায়।

কয়েক জন মেডিসিন বিক্রয় প্রতিনিধি জানালেন ভিন্ন কথা, ঘুরে ফিরে কাস্টমার বাহিরে না গিয়ে তার কাছে আসার জন্য তিনি লিখিত ব্যবস্থাপত্র দেন না বলে জানালেন। বিমল কান্তি জানান, রোগী জ্যাম বেশী থাকে তাই লিখে সময় ব্যায় করেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, রোগীদের এইসব হাতুড়ে ডাক্তারেরা চিকিৎসা কালীন যে কোন দূর্ঘটনা এড়াতে ধূর্তমী করে এই কৌশল ব্যবহার করেন। তারা এই কথাও বলেছেন, রোগীদের এতোবেশী পাওয়ারফুল মেডিসিন প্র‍য়োগের ফলে এন্টি হ্যিউম্যান বডি রিস্টেন্স করে ফেলে। তাই শেষ মূহুর্তে আমাদের কাছে আসলে কিছুই করার থাকেনা। উলটো রোগী পক্ষের লোক জন ডাক্তারদের হেনস্তা করার মতো ঘটনা ঘটেছে কয়েক দফা। কিন্তু এই এলাকার মানুষ এরপরেও বুঝেনা।

গ্রাম ডাক্তার সমিতির সভাপতি কর্তৃক তার মতো আরো অনেক কে ডাক্তারী সার্টিফিকেট দেয়ার বিষয়টি প্রমান করতে গিয়ে সার্টিফিকেট দূরে,আনতে সময়ের প্রয়োজন বলেন। তবে এইভাবে ৫০০/১০০০ টাকায় তিনি অনেক সার্টিফিকেট বিক্রয় করেছেন বলে সমিতির কয়েকজন দায়িত্বশীলরা স্বীকার করেছেন। অপরদিকে তিনি যেসব ডাক্তারদের সার্টিফিকেট নেই বলেছেন,অনুসন্ধানে তাদের সার্টিফিকেটের বৈধতার প্রমান মিলেছে। কিন্তু খুদ সমিতির সভাপতির (এলএমএফ) ডিগ্রীর উস্তাদ দুই যোগের বেশী সময় ধরে এলাকায় ফার্মেসী ব্যবসায়ী বাবু তপন বলে সূত্রে জানা গেছে।
তাই এই এলাকার তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষের জীবন রক্ষকারীর বেশে কুড়ে কুড়ে শেষ করা হাতুড়ে ডাক্তারদের আতুড় ঘরে ভাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান সম্মিলিত সচেতন মহল।