স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আসছে বাংলাদেশে

: হুমায়ুন রশিদ
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

টেকনাফ টুডে ডেস্ক : মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশ পরিবহন প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সক পরিচালিত স্টারলিংককে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যবসায় কিছুটা প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে।

স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক ৬০টিরও বেশি দেশে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দিয়ে আসছে।

বুধবার টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, নীতিগতভাবে আমি স্টারলিংককে লাইসেন্স দিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বলেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা শহর ও গ্রামের মানুষের জন্য সমানভাবে ইন্টারনেট সেবা দিতে চাই। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল বিশেষ করে গ্রাম, চর ও দ্বীপগুলোয় ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত হবে।

স্টারলিংক অনুমোদন পেলে দেশে প্রচলিত টেলিযোগাযোগ ও কেবল ইন্টারনেট পরিষেবায় প্রতিযোগিতা বাড়াবে। দেশে ইন্টারনেট পরিষেবার মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি এর পরিধি প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্টারলিংক ইন্টারনেটের দাম বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত বেশি। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, বেশিরভাগ জায়গায় এর পরিষেবা নিতে মাসে প্রায় ১২০ ডলার খরচ হয়। প্রথমদিকে, হার্ডওয়্যার খরচসহ তা ৫৯৯ ডলারে পৌঁছায়।

স্থানীয় আইএসপি থেকে পাঁচ এমবিপিএস ব্রডব্যান্ডের দাম প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ টাকা ও মোবাইল ইন্টারনেটের দাম প্রতি ৩০ জিবিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পড়তে পারে।

এর আগে স্পেসএক্স বাংলাদেশে স্টারলিংক পরিষেবা চালুর ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং গত জুনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এ বিষয়ে একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

স্পেসএক্স’র গ্লোবাল গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার জোয়েল মেরেডিথ ও গ্লোবাল লাইসেন্সিং অ্যান্ড অ্যাক্টিভেশন ম্যানেজার পার্নিল উর্ধারেশ এর সুবিধাগুলো তুলে ধরেন।

এর আগে, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘স্পেসএক্সের কর্মকর্তাদের পরিবেশনায় দেখা গেছে স্টারলিংকের ইন্টারনেট ও ডাউনলোড স্পিড প্রায় ৫০০ এমবিপিএস।’

আইসিটি বিভাগে অপর এক পরিবেশনায় দেখা গেছে এর ডাউনলোডের গতি ১৫০ এমবিপিএস।

বিএসসিএল পাঁচটি স্টারলিংক টার্মিনাল (স্টারলিংক কিটস) নিয়ে সেগুলো বৃষ্টি, কুয়াশা ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় স্টারলিংক কীভাবে কাজ করে তা বিশ্লেষণ করে।

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমরা বিশ্লেষণের ফল দেখেছি। সেগুলো ভালোভাবে কাজ করেছে। এখন তাদেরকে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, আমরা স্টারলিংকে লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক। ইতোমধ্যে তাদের এই পরিষেবা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছি।

গত অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ১৩ কোটি ১৮ লাখ ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল। এর মধ্যে আছে এক কোটি ২৫ লাখ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ১১ কোটি ৯৪ লাখ মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম জানান, ফাইবারভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা যেসব এলাকায় নেই সেসব এলাকায় স্টারলিংকের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়া যাবে।