সেন্টমার্টিনে পরিবেশিত হচ্ছে অপরিচ্ছন্ন খাবার ; প্রতারিত হচ্ছে পর্যটক!

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

জসিম উদ্দিন টিপু : প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের রেস্টুরেন্ট গুলোতে যত্রতত্র পরিবেশিত হচ্ছে অপরিচ্ছন্ন খাবার। অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করায় পর্যটকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা গেছে। নিরুপায় হয়েও পর্যটকরা এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। এদিকে পর্যটকরা সেন্টমার্টিনের খাবার হোটেলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দামের ক্ষেত্রেও পর্যটকরা প্রতিনিয়ত ঠকছেন বলে জানান। দেখাগেছে, রাস্তাার দ্বারে তৈরী করা খোলা খাবার অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসনিক তদারকী না থাকায় খাবার পরিবেশনকারী রেষ্টুরেন্ট সংশ্লিষ্টরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছেন বলে জানাগেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,দ্বীপে সব মিলিয়ে শতাধিক রেষ্টুরেন্ট বা খাবার হোটেল রয়েছে। প্রতিটি হোটেলের সামনে রাস্তার দ্বারেই এসব রেষ্টুরেন্টে মশলা, মরিচসহ প্রয়োজনীয় উপাদান মিশ্রিত মাছ বড় থালা/টেবিলে সাজিয়ে রাখেন। সড়কের উপর সাজিয়ে রাখা এসব থালায় কোন ধরণের ঢাকনা নেই। ফলে হাজার হাজার পথচারীর যাতায়াতের সময় ধূলাবালি খোলা ঢালায় পড়ছে। পর্যটক আসা মাত্র ওই সব ঢাকনা বিহীন থালা থেকে মাছ ভাজিয়ে দেন। যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। বিভিন্ন সময় এসব খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পর্যটকসহ সচেতন মহল স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ঢাকা মিরপুর আগারগাঁও তালতলা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যায়নরত ছাত্র তাবিব জানান, দ্বীপের খাবারের হোটেল গুলির অবস্থা খুবই বাজে। পর্যটকেরা আরো জানান, রেষ্টুরেন্টে কর্মরতদের এক ধরণের তরকারী অর্ডার করলে সরবরাহ করেন আরেক ধরনের। খাবারের মূল্যটাও খুব বেশী বলে জানান এই পর্যটক। চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আবু বক্কর ছিদ্দিক টিপু জানান, প্রবাল দ্বীপে রেষ্টুরেন্টের খাবার প্রায় খোলা থাকে। অপরিচ্ছন্ন খাবার ছাড়া এখানে মান সম্মত খাবার পাওয়াই দুস্কর। তিনি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশনের কথাও জানান। ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা আরেক পর্যটক ডাক্তার মাছুম বিল্লাহ জানান, সেন্ট মার্টিনের খাবার হোটেল বোধহয় একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত। তারা যাকে যেভাবে পাচ্ছে সেভাবেই টাকা নিয়ে নিচ্ছেন। খাবারের মান নিয়ে তিনি চরম অসন্তুষ্টির কথা জানান। ভ্রমণ পিপাসু টেকনাফের হোয়াইক্যং নয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা ও উন্নয়নকর্মী এইচ এন আমান জানান, ভাষার তারতম্যের সুযোগ বুঝে দ্বীপে রেস্টুরেন্ট সংশ্লিষ্টরা খাবারের মূল্য নিয়ে নিচ্ছেন। তিনি খাবার হোটেলের গলাকাঁটা বাণিজ্য এবং অপরিচ্ছন্ন খাবার পরিবেশনের কথা জানান। দ্বীপের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান খাঁন জানান, ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা মূলত খাবারের মূল্য বেশী নিয়ে নিচ্ছেন। তবে তিনি অপরিচ্ছন্ন খাবার পরিবেশনের কথা স্বীকার করেন। অপরিচ্ছন্ন খাবার পরিবেশন না করতে ইতিমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে। যদি কেউ অপরিচ্ছন্ন খাবার বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুমন বড়ুয়া জানান, খোলা খাবার খেলে ডায়রিয়া, জন্ডিস, টাইফয়েডের মত মারাত্মক রোগ হতে পারে। তিনি প্রবালদ্বীপে পর্যটকদের সুবিধার্থে স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবশনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, পর্যটক হোক স্থানীয় হোক। কোনমতেই অপরিচ্ছন্ন খাবার পরিবেশনের সুযোগ নেই। তিনি এই বিষয়ে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। #