টেকনাফ টুডে ডেস্ক : সুবর্ণচরে ভোটের রাতে ধর্ষণের আসামি রুহুল আমিনকে জামিন দিয়ে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে হাই কোর্ট, ফলে বহিষ্কৃত এই আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তি মিলছে না।
আসামি পক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে শনিবার ছুটির দিনে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারকরা চেম্বারে বসে আগের আদেশ প্রত্যাহারের (রিকল) সিদ্ধান্ত জানান।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বলেছেন, আসামি পক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন তারা। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনও করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে ধর্ষণের মামলার আসামি রুহুল আমিনকে গত সোমবার জামিন দিয়েছিল বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় বলেছিলেন, “আসামির আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করেছেন। জামিন আবেদনে উল্লেখ আছে এনএক্স-১৭ নম্বর কোর্টের কথা। অর্থাৎ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য ফাইল হয়েছে। ফলে আবেদনটির অনুলিপি গেছে ওই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে। যেদিন জামিন হয় সেদিন আসলে আমরা বুঝতেই পারিনি, কার জামিন হয়েছে।”
আদালতে রুহুল আমিনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. আশেক-ই-রসুল। বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের নজরে আনার পর আদালত তৎপর হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, “আগে দেওয়া জামিনের আদেশটি যেন কার্যকর করে না হয়, সেজন্য রিকলের বিষয়টি দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে পাঠানো হচ্ছে।”
আসামি পক্ষের এই আচরণকে নজিরবিহীন আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “আদালত বলেছেন, তারা বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনবেন। “এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা বার কাউন্সিলে দরখান্ত করব। আদালত অবমাননার ব্যবস্থা নিতে আদালতে আবেদনও করা হবে।”
রুহুল আমিন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ধর্ষণের আসামি হওয়ার পর তাকে বহিষ্কার করা হয় দল থেকে। তিনি চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।
গত ৩০ ডিসেম্বর সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গোপাঙ্গরা’ স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে চল্লিশোর্ধ ওই নারীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ এসেছে। ভোটের পর রাতে এই ধর্ষণকাণ্ডে ব্যাপক আলোচনা ওঠে দেশজুড়ে। আলোচিত এই মামলায় রুহুল আমিনসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই গৃহবধূর স্বামীর করা এই মামলার এজাহারে মোট নয়জনকে আসামি করা হয়েছিল। রুহুল আমিনকে আসামি করতে না পারায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ওই নারী। পরে রুহুল আমিনকেও আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।