“শুধু দবির নয় তিনি দানবীর”

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

মোঃ আল আমিন : চট্টগ্রাম শহরে অনেকেই আছেন যারা সবসময় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে স্নেহের ছায়া দিয়ে তাদের প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আমি সব স্নেহশীল সুহৃদদের প্রতি হৃদয়ের গভীর থেকে স্যালুট জানাই। “পরশ” এর পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী সমাজের পক্ষ থেকে জানাই কৃতজ্ঞতা।

আজ এমন একজন ব্যক্তির কথা বলতে চাই যার কথা না বললে নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হয়। যিনি দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পথ সুগম করতে অর্থ দিয়ে , উৎসাহ অনুপ্রেরণা দিয়ে, সুপরামর্শ ও মানসিক শক্তি দিয়ে প্রতিবন্ধীদের ঋণী করে চলেছেন দিনের পর দিন।
বলছিলাম চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের সুযোগ্য ও সুদক্ষ অধ্যক্ষ দবির উদ্দিন খান ওরফে দবির স্যার এর কথা। স্যার সত্যি ধন্যবাদ আপনাকে বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই , শুধু বলতে পারি আমরা আপনার কাছে বড্ড ঋণী।

সুভাষী বড় মিশুক মানুষ তিনি।

একদিন প্রসঙ্গক্রমে স্যারকে নিয়ে কথা উঠতেই পরশ এর সম্মানিত সভাপতি বড় ভাই মোঃ রফিকুজ জামান স্যার সম্পর্কে যা বললেন: নিম্নরূপ।
স্যার এর সাথে প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১২-১৩ সালের দিকে , কোন একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে নিয়ে স্যার এর কাছে গিয়েছিলাম। হয়তো বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ চেয়ে আবেদন হাতে নিয়ে ,ঐ দিনই স্যারের এমন সাদাসিধে অমায়িক আচরণে সত্যি মুগ্ধ হয়েছিলাম। স্যার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর পড়াশোনার পথ সুগম করতে আপনার কাছে আসছি বলতেই স্যার আবেদন খানা হাতে নিয়ে সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন । ঐ দিনের কথা আমি কখনো ভুলবো না।

মূলত সে দিনের পর থেকে ঋণের বুজা বাড়ছে আর বাড়ছে শুধু এই দবির স্যার এর অনুকম্পায় ।

স্যার কত জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ফ্রি পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছেন ঠিক সংখ্যা বলতে পারবো না তবে যদি নাম উল্লেখ করে বলি তাহলে বলতে হয় মোহাম্মদ আল আমিন আমি নিজেই। হিমেল কান্তি দে,আরাফাত সুরত আলম, ইয়াছমিন আক্তার, ফাতিমা, রিপা আক্তার , পায়েল ও হাসানুজ্জামান এর মতো আরও অনেকেই জীবন্ত সাক্ষী ।যাদের ভর্তি ফি , মাসিক ফি সহ যাবতীয় ফি ( হয়তো সামান্য খরচে) মওকুফ করে হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের মতো একটি স্বনামধন্য কলেজে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন এই দবির স্যার এর মহানুভবতায়।
আবার উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে অনেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন এই গুণী অভিভাবকের অনুপ্রেরণা, সুপরামর্শ ও ভালবাসায়।

শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয় তিনি প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিকাশে আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতা করে যেভাবে ভুমিকা রেখে যাচ্ছেন তা অনন্য। বিশেষ করে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা যখন বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আর্থিক সংকটে পড়েন , দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য ঢাকার যাতায়াত ও থাকা খাওয়ার খরচের অর্থের সংকট দেখা দেয় , তখন কেউ আসুক বা না আসুক দবির স্যার এর ছায়ার পরশ কিন্তু ঠিকই হাজির হয়ে যায় ! তাই তো প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি এত প্রিয় স্যার দবির উদ্দিন খান। তাই তো প্রসঙ্গত এক দিন চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্যার আব্দুস সামাদ (অবঃ) বলেছেন” তিনি শুধু দবির নয় তিনি দানবীর”

স্যার আমার এই সংক্ষিপ্ত লেখায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রতি আপনার যে অবদান তা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়, তাই দুঃখ প্রকাশ করছি। সেই সাথে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রতি আপনার সহযোগিতার হাত চির উন্মুক্ত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি ।
স্যার জয় হোক প্রতিবন্ধীদের প্রতি আপনার কৃতিত্ব, চির অম্লান হোক আপনার ভালোবাসা।

শুভেচ্ছান্তে :
মোঃ আল আমিন
শিক্ষার্থী (দৃষ্টি প্রতিবন্ধি)
আইন বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রতিবন্ধী মানুষদের আস্থা ও ভালোবাসার সংগঠন “পরশ”