নিজস্ব প্রতিবেদক : পেকুয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব নিতে জামায়াত বিএনপি সিন্ডিকেট নিয়ে মরিয়া হয়েছেন আওয়ামী একটি সিন্ডিকেট। অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন আহমদ নৈপথ্যে থেকে সিন্ডিকেটটির পক্ষে কাজ করছেন। এ নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সচেতন শিক্ষাবীদ মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আগামী ১৯ জানুয়ারী জেলার শ্রেষ্ট বিদ্যাপিঠ শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ গঠনের জন্য অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচন। উক্ত অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচনে জয়ী হতে দুটি প্যানেল করে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন বেলাল উদ্দিন আহমদ ও উপজেলা আওয়ামীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজিউল ইনসান।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন, বেলাল উদ্দিন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকলেও শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচনে এককালীন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্র শিবিরের ক্যাডার ও ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগ নির্যাতনকারী চক্রের হোতা ছাত্র শিবিরের সাবেক দায়িত্বশীল নেতা ছরওয়ার আলম ভুট্টু, ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্বাছ আহমদ সহ মহিলা সংরক্ষিত সদস্য পদে পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলে সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী প্রায়াত হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে সেন্ডিকেট সদস্য করে বেলাল উদ্দিন আহমদ প্যানেল করে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।
আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, নিজের পক্ষে শিলখালী স্কুলের কর্তৃত্ব ও দখল দারিত্ব নিতে জেলা বিএনপির প্রভাবশালী সদস্য ও শিলখালী বিএনপির সাবেক সভাপতি মাষ্টার জুবাইর আহমদ এর কন্যা সেলিনা আক্তারকে সদস্য করেন। বেলাল উদ্দিন একজন মুজিব আদর্শের নেতা দাবী করে দীর্ঘ ১৪ বছর শিলখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে জামায়ত বিএনপির নেতাদের নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে আওয়ামীলীগ নিধনের হাতিয়ার হয়ে জোটবদ্ধ হয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।
অন্যদিকে নির্বাচনে আর একটি প্যানেলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শীলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাতা ও দাতা সদস্য শিলখালী ইউনিয়নের দুইবার নৌকার টিকেটে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজিউল ইনসান, বিশিষ্ট রাজনৈতিক, নিঃস্বার্থ সমাজকর্মী নুরুল ইসলাম, শিলখালী ইউপি সাবেক মেম্বার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শাহাব উদ্দিন ও মহি উদ্দীন সহ মাষ্টার শাহ আলম এর কন্যা শামশেদ জাহানকে নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়েছেন।
এই দুই প্যানেলের মধ্যে বেলাল সিন্ডিকেট জামায়াত বিএনপির আতাতভুক্ত, অন্যদিকে কাজিউল ইনসানকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্বপক্ষের প্যানেল। উভয় পক্ষের নির্বাচন নিয়ে এলাকাবাসী দুঃচিন্তায় ভুগছেন। কেননা পদের জন্য দল দুই গ্রæপে বিভক্ত হয়ে মুখামুখি প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্যানেলকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রাজনৈতিক ভাবে নিজের আধিপত্য বিস্তারে জামায়াত বিএনপির সাথে সংঘবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্যানেলকে ভরাডুবি করতে বদ্ধপরিকর বেলাল উদ্দীন আহমেদ।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিগত সময়ে দলীয় পদবীতে থেকে দুইবার ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতিকের প্রার্থী কাজিউল ইনসানকে পরাজিত করতে প্রাণপন বিরোধীয় ছিলেন বিধায় অবশেষে বেলাল উদ্দীনের বিরোধীতায় কাজিউল ইনসানের ভরাডুবি হয়। বেলাল সিন্ডিকেটের প্রত্যেক মদদে প্রতিনিয়ত আওয়ামীলীগের তৃনমুল নেতাকর্মী লাঞ্ছিত ও অপমানিত হ”েছ। বিগত ১২ বছর জামায়াত বিএনপির সাথে একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিটি সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত সহ তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রেয় দিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন শিলখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নেজাত মুহাম্মদ।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বারবাকিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাষ্টার ছাবের আহমদ জানান গত ২০২০ সালে মুজিব বর্ষ ও ১৫ আগষ্টে শিলখালী স্কুলে লাগানো জাতির পিতা ও জাতীয় নেতাদের ছবি বেষ্টিত ব্যানার পেষ্টুন রাতের আধারে কে বা করা চাকু দিয়ে কেটে ফেলে। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে তদন্তভার দিলে, তদন্তে ফুটে উঠে স্থানীয় জামায়াত বিএনপির সাথে আওয়ামীলীগের নেতা বেলাল উদ্দীন এর প্রভাবে দুষ্ট চক্র জাতির পিতার ছবি কেটে ও ছিড়িয়ে ফেলার প্রমাণ মিলে। আমি এ বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দায়ের করিয়াছি।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও এমইউপি বাহাদুর করিম জানান যখন আওয়ামীলীগের জয় হওয়ার সম্ভবনা সেখানে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন বাধা হয়ে বার বার দাড়িয়েছেন। ফলে আমরা প্রতিটি নির্বাচনে সব ¯’ানে হেরেছি। ¯’ানীয় বিএনপির সহ সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন এর নিদের্শ ছাড়া বেলাল উদ্দীন গত ১২ বছর এক দিনও কোন কাজ করেনি বরং দলের বিরুদ্ধে করেছেন। সর্বাক্ষনিক ইউনিয়ন বিএনপির নীতি নির্ধারকদের সাথে উঠাবসা তার। শিলখালী স্কুলের কর্তৃত্ব দখলে নিতে জামায়াত বিএনপির সাথে জোট বদ্ধ হয়ে ভোট যুদ্ধে নেমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ভরাডুবির চক্রান্তে নীলকশা বাস্তবায়নে নেমেছেন। আমি তার ১২ বছরের আওয়ামীলীগ বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে বাহিষ্কার দাবী করছি।##