বার্তা পরিবেশক : লেদা রোহিঙ্গা বস্তিতে পারিবারিক কলহের বিচার সমাধান করতে গিয়েই উৎকোচ দাবীর অভিযোগ উঠেছে বস্তি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। উৎকোচ না দেওয়ায় বিচার প্রার্থীরা উল্টো হামলার শিকার হয়েছে।
জানা যায়,গত ১৬ডিসেম্বর সকাল ৮টারদিকে লেদা ২৪এলএমএস ক্যাম্পের চেয়ারম্যান মোঃ আলম প্রকাশ আলম মাঝির নিকট বি-ব্লকের ৩০২নং রোমের বাসিন্দা সাইফুলের পুত্র নুরুল কবিরের বোন রোকেয়া বেগমকে স্বামী আনোয়ার সাদেক কর্তৃক প্রহার করে রক্তাক্ত করার ঘটনায় সালিশ দায়ের করে আসামী ধরে দেওয়া হয়। তখন চেয়ারম্যান আলম সেল ঘরে অভিযুক্ত স্বামীকে আটকে রাখে। ধৃত আসামীকে ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে চালান করার জন্য মেম্বার নুরুল বশর বাদী নুরুল কবিরের নিকট ১০ হাজার টাকা খরচ দাবী করে। তখন নুরুল কবির দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধমকি দিয়ে মালয়েশিয়া হতে ধৃত আনোয়ার সাদেকের ভাই আমির সাদু হতে বিকাশের মাধ্যমে ভলান্টিয়ার জমিল আর ছৈয়দ আলম ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ করে আসামীকে গায়েব করে ফেলে।
আসামী গায়েব হওয়ার ঘটনা থানায় অভিযোগ দিয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসার কিছুক্ষণ পূর্বে আসামী আনোয়ার সাদেককে মেম্বার নুরুল বশর, ভলান্টিয়ার জমিল ও ছৈয়দ আলম ছেড়ে দেন। এই ব্যাপারে পরদিন নুরুল কবির তার সোর্পদকৃত আসামী কোথায় বলে বস্তির চেয়ারম্যান আলম মাঝির নিকট জানতে চান। তখন রেগে বস্তির চেয়ারম্যান আলম মাঝি বলেন আমি তোমার বাপের দিইন্না গোলাম নাকি বললে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শেষে নুরুল কবির বাড়ি ফিরে যায়। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর আলম মাঝি, তার ভাই মোঃ হাশেম, বেয়াই মোঃ আইয়ুব মিলে কয়েকজন ভলান্টিয়ার দিয়ে নুরুল কবিরকে ঘর হতে ধরে এসে মারধর করতে থাকলে নুরুল কবিরের মা নুর নাহার এসে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করে। এই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পের শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এরপর হামলাকারীরা উল্টো ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য নয়াপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে গেলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ভলান্টিয়ার জামিল জনৈক নুর মোহাম্মদকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের অপকর্মের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ফিরে যান এবং আগামী শুক্রবারে এই বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেন।
টেকনাফ থানা পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামী আনোয়ার সাদেকে হাজির করতে বলে এখনো পর্যন্ত তারা হাজির করেনি। সে থেকে এখনো পর্যন্ত আসামী আনোয়ার সাদেকের খোঁজ মিলছেনা বলে দাবী করেন।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত বস্তি চেয়ারম্যান আলম মাঝি এবং মেম্বার নুরুল বশরের নিকট জানতে চাইলে বলেন,পারিবারিক বিরোধের জেরধরে আনোয়ার সাদেককে ধরে দিলে বিচারের সেল ঘরে রাখা হয়। রাতে সেই ঘর ভেঙ্গে আসামী পালিয়ে যায়। তবে টাকা গ্রহণ ও টাকা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করেন।
ভূক্তভোগী পরিবারের দাবী, এই বস্তির চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ বিচার-সালিশের নামে প্রায় সময়ে সাধারণ রোহিঙ্গা থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। উপরোক্ত বিষয়ে ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। #