টেকনাফ টুডে ডেস্ক : উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে গত এক বছরে কমপক্ষে ১৫ জন রোহিঙ্গা খুন হয়েছেন সন্ত্রাসীদের হাতে। তাঁদের সবাই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার উখিয়া ক্যাম্পে সৈয়দ হোসেন (২৩) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক খুন হন। তিনি থাইংখালী ১৯ নম্বর তাজনিমারখোলা ক্যাম্পের এ-ব্লকের মৃত জামিল হোসেনের ছেলে।
এর আগে দুষ্কৃতকারীদের হাতে জামিল হোসেন মারা যান। ওই হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য তৎপর ছিলেন ছেলে হোসেন। ওই ঘটনার জেরেই তিনি খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত শনিবার রাতে থাইংখালী ১৩ নম্বর তাজনিমারখোলা ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ আনোয়ার ও ব্লক মাঝি মৌলভি মোহাম্মদ ইউনুসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ক্যাম্পের সাধারণ রোহিঙ্গাদের ভাষ্য, শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মহিব উল্লাহ, বালুখালী মাদরাসায় ছয় রোহিঙ্গা হত্যা, বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর, একই ক্যাম্পের মাঝি আজিম উদ্দিন, ৭ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি ইসমাইল ও কুতুপালং ক্যাম্প-৪-এর মাঝি এরশাদ হত্যা, ৯ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ হোসেন, থাইংখালী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পের আনোয়ার ও ইউনুস হত্যা এবং সর্বশেষ হোসেন হত্যার পেছনে একই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জড়িত। তারা রোহিঙ্গাদের সৎ নেতাদের হত্যা করে ক্যাম্পে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।
থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বয়োবৃদ্ধ সলিম উল্লাহ বলেন, হেড মাঝি আনোয়ার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও ভাসানচরে স্থানান্তর বিষয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্বুদ্ধ করতেন। তাঁর কারণে সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পে সুযোগ পেত না। এই ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের অভিভাবকশূন্য করতে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
উখিয়ার থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানায়, শনিবার মোহাম্মদ আনোয়ার ও মৌলভি মোহাম্মদ ইউনুস খুনের পরই নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এর মধ্যেই মঙ্গলবার আরেকজন খুন হলেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, সর্বশেষ খুনের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে দুই মাঝি খুনের ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা নুর হাসান বলেন, এই ক্যাম্পে এর আগে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জোড়া খুনের ঘটনায় এখনো কেউ এজাহার দেয়নি।
সুত্র : দৈনিক কালের কণ্ঠ।
