রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক:মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যাবর্তন কীভাবে হবে সে বিষয়ে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে দু’দেশ। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ কাজ শুরু করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি’র দফতরের মন্ত্রী কিও তিন্ত সোয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় দুপুর ১টায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আরও বলেন, মিয়ানমারের পক্ষের সঙ্গে খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল খুব শীঘ্রই মিয়ানমার সফরে যাবেন। সে সফরে মিয়ানমারের সঙ্গে ‘সীমান্ত সুরক্ষা সম্পর্কিত একটি সমঝোতা স্মারক’ সই হতে পারে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্রসচিব শহিদুল হক, বিজিবি ডিজি আবুল হোসেন ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করতে গতকাল রাত ৮টার দিকে ঢাকায় আসেন মিয়ানমারের এই মন্ত্রী। তবে মিয়ানমারের মন্ত্রী তার দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখার জন্য কক্সবাজার যাবেন না। যদিও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে মিয়ানমারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী নতুন করে অভিযান শুরুর পর গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। জাতিসংঘ রাখাইনের ওই সেনা অভিযানকে চিহ্নিত করেছে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে। গত কয়েক দশক ধরে আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশ বলে আসছে, মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের জায়গা দেয়া হলেও মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে বলে জাতিসংঘে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অষ্টম পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে সময়ে দুই মাসের মধ্যে শিবিরে থাকা তালিকাভুক্ত ২ হাজার ৪১৫ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মিয়ানমার। তবে এখনও তাদের ফিরিয়ে নেয়নি দেশটি। সর্বশেষ ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এরপর থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ রয়েছে। উল্লেখ্য,ইউএনএইচসিআর পরিচালিত কক্সবাজারের কুতুপালং ও নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে নিবন্ধিত প্রায় ৩২ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে।