এম.এ আজিজ রাসেল : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রামুতে সাত দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’র বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করা হয়েছে। ‘তোমার জন্ম হয়েছে বলেই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ’ এ শ্লোগানে সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় রামু স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। জাতির জনক। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছর তিনি দেশ শাসনের সুযোগ পেয়েছিলেন। এই স্বল্প সময়ে বঙ্গবন্ধু ধ্বংসপ্রায় দেশটির পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নানা কল্যাণমুখী পরিকল্পনা করেন। মাত্র ১০ মাসের মধ্যে তিনি একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান উপহার দেন, যার ভিত্তি ছিল জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে রাষ্ট্রকে মুক্তিযুদ্ধের এসব আদর্শের বিপরীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন নেতা, যাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সম্পর্ক গভীর। ঘাতকের বুলেট তাঁকে হত্যা করলেও সে সম্পর্ক মোটেই ছিন্ন করতে পারেনি। যত দিন যাচ্ছে, ততই ইতিহাসে তাঁর নাম সমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাফর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু উৎসব উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অশেষ অবদানে আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। আজকের প্রজন্মকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস জানাতেই রামুতে ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ আয়োজন করা হয়েছে। এই উৎসবে ইতিহাস বিকৃতি বা অপসংস্কৃতিকে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু উৎসব’র মহাসচিব রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. আয়াজ উদ্দিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুসরাত জাহান মুন্নী, রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারূফ আদনান, সহ-সভাপতি মুন্না চৌধুরী, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক, মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুছ ভুট্টো, ব্রাদার্স ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম ও রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, সাহিত্য, সাংবাদিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাত দিনের ‘বঙ্গবন্ধু উৎসবে’ প্রতিদিন বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ মঞ্চে প্রতিদিন সন্ধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস উপস্থাপন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতা, ছড়া, গান, নাটক মঞ্চায়নে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া প্রতিদিনের স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্টজন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয়, জেলা ও উপজেলার নেতা সহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন।
রামুতে ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ আয়োজন করেছে, ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন পরিষদ, রামু। এ উৎসব আয়োজনে পরিশ্রম করছেন, রামু উপজেলার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী নেতাকর্মী সহ বঙ্গবন্ধু প্রেমী মানুষরা।
‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু উৎসবকে ঘিরে ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীরা নানান রকমের পণ্য সামগ্রী নিয়ে শতাধিক ষ্টল সাজিয়ে বসেছে। মেলা প্রাঙ্গনে ম্যাজিক নৌকা, চরকি ও নাগর দোলায় চড়া শুরু করেছে শিশুরা। উৎসবকে কেন্দ্র করে, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বঙ্গবন্ধু কথায় সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সড়কের তোরণ, মেলা প্রাঙ্গন। আয়োজন করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর চিত্র ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রতিযোগিতা।
আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসব চলবে।