মোঃ আশেকুল্লাহ ফারুকী,টেকনাফ : পাহাড়, নদী, সাগর, দ্বীপ, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, ওপাড়ে মিয়ানমার সীমান্ত এ ছয়টির বৈশিষ্ঠের অধিকারী এই টেকনাফ। ক্রমান্নয়ে উন্নয়নে দৃশ্যপট পাল্টে গেলেও ফসলী জমির উপর অপরিকল্পিত নগরায়ন পাকা ভবন, সরকারী বেসরকারীভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, সড়ক, ব্রীজ, মাটি কাটা, ভরাট, ইটভাটা, স্থাপন, লবণের মাঠ তৈরী, রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপন, প্লট তৈরীসহ ইত্যাদীর কারণে ফসলী জমির পরিমান কমে যাচ্ছে। সরকারী তথ্য অনুযায়ী টেকনাফে ৫২% শতাংশ মানুষ দরিদ্রসীমার মধ্যে বসবাস করছে। তাদের আয়ের এবং বসবাসের একমাত্র মাধ্যম ফসলী জমি। এসব কারণে টেকনাফে আশংখাজনক হারে ফসলী জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে উৎপাদিত খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। এমন আশংখা বিশিষ্ট জনদের। পৌর শহর ইউনিয়ন পর্যায়ে মিনিশহর ছাড়াও গ্রাম পর্যায়ে ফসলী জমিতে ও পরিবেশ বন্ধব পরিপন্থি নগরায়ন গড়ে উঠেছে। হোয়াইক্যং, হ্নীলা, বাহারছড়া এ ৩টি ইউনিয়ন পাহাড় ও নাফ নদীর সাথে একাকার। এখানে প্রায় ৮টি ইটভাটাসহ বিভিন্ন কোম্পানীর স্থাপনা ও যত্রতত্র স্থানে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা গড়ে উঠছে। যাহা আদৌ স্বাস্থ্য সম্মত নয়। লবণের মূল্য বৃর্দ্ধিতে ফসলী জমিগুলো ক্রমান্নয়ে ধেয়ে আসছে, লবণ মাঠে। এভাবে ফসলী জমি লবণ মাঠ তৈরীতে আশপাশের বৃক্ষাদী মরে যাচ্ছে। নলকূপের পানিতে লবনাক্ত এবং মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিনত হচ্ছে। ফসলী জমি বেশীরভাগ মিয়ানমারের নাগরিকদের হাতে দখলে চলে যাচ্ছে। এসব জমি বেনামে স্বনামে দালালদের মাধ্যমে ক্রয় করে তাদেরকে বসতি করার সুযোগ করে দিচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ সীমান্তে বসবাসকারী পুরাতন রোহিঙ্গা এবং বর্তমানে বাংলাদেশী নাগরিক সেজে প্রভাবশালী ইয়াবা ব্যবসায়ী রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে বসবাস করার উদ্দেশ্যে জায়গা ক্রয় করে বসবাসের সুযোগ করে দিচ্ছে। এসব জায়গা বেনামে স্বনামে (ভাড়াটে আইডি কার্ড) এর মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করলেও ক্রয়কৃত জায়গার উপর স্থায়ীভাবে বসবাস করছে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা। যেমন, টেকনাফ পৌর এলাকার নাইট্যং পড়া, পুরাতন পল্লান পাড়া, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল, মহেশখালীয়া পাড়া, লেঙ্গুরবিল, ডেইল পাড়া, নাজির পাড়া, মৌলভী পাড়া, ছোট/বড় হাবিব পাড়া, সাবরাং ও হ্নীলা ইউনিয়নের গ্রাম এলাকায়। একশ্রেণীর দালাল ও দলিললেখক রোহিঙ্গাদের পক্ষপাতিত্ব এবং আর্থিভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে জালিয়তীর মাধ্যমে এসব রাষ্ট্রদ্রোহীতা মূলক কাজ করেই যাচ্ছে। এছাড়া লবণের মূল্য বৃর্দ্ধির কারণে কৃষি জমিকে লবণের জমিতে পরিনত করছে। নীরবে লবণের জমি ক্রমান্নয়ে ধেয়ে আসছে। কৃষি জমি লবণ মাঠ করার প্রবনতা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আইন থাকলেও এ আইন প্রয়োগ হচ্ছেনা। ফলে লবণ মাঠ জন বসবাস এলাকায় চলে আসছে এবং পরিবেশের উপর মারাতœক বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বৃক্ষমরে যাচ্ছে। ভূমির স্থর থেকে মিটাপানির পরিবর্তে লবনাক্তপানি আসছে। মশার প্রজনন বাড়ছে। অপরদিকে উন্নয়নের নামে প্রাকৃতির পাহাড় কেটে পর্যটকদের জন্য সাগর উপকূলীয় এলাকা উম্মোক্ত করা হচ্ছে।