মুহাম্মদ হানিফ আজাদ, উখিয়া ॥
কাউন্টার থেকে স্লীপ হাতে নিয়ে বারান্দায় অপেক্ষা করছে শতাধিক মহিলা ও শিশু রোগী। আইওএম’র একজন চিকিৎসক থাকলেও শারীরিক অসুস্থার অজুহাত তুলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে না। তবে ডাক্তারের চেয়ারে বসে বেতন বিলের কাজ করছে। এসময় রোগীদের আহাজারি, চেচাঁমেছি ও শিশুদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০ টায় উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে রোগীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
হারাশিয়া গ্রামের গৃহিনী মরিয়ম খাতুন (২৪) কেঁেদ উঠে সাংবাদিকদের জানান, তার ৮ মাস বয়সের শিশু আবির নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে ২/৩ দিন ধরে। গতকাল শনিবার ভোর সকাল থেকে হাসপাতালে এসে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু ডাক্তার থাকলেও তার কোন মানবিক দায়িত্ববোধ না থাকায় শত অনুনয় বিনয় করার পরও শিশুটিকে এক নজর দেখেনি বলে অভিযোগ করেন।
এসময় ওয়ালাপালং থেকে আসা মহিলা রোগী জিগার সুলতানা (২৮) জানায়, আইওএম’র চিকিৎসক ডাক্তার আহাদের কাছে গিয়ে তার শারিরীক অবনতির কথা বলার পরও রেগে উঠে ওই ডাক্তার বলেন, সে এখন অসুস্থ, সুস্থ হয়ে উঠলে রোগী দেখা হবে। ইচ্ছা থাকলে অপেক্ষা কর, না পারলে চলে যাও। এমন দূর্ব্যবহার নিয়ে হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা গেছে। টিকেট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দায়িত্বরত সরওয়ার নামের একজন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী রোগীদের টিকেট দিচ্ছে।
জানতে চাওয়া হলে, টিকেট নিয়ে চিকিৎসা নেবে কোথায়? প্রতি উত্তরে সে জানায়, কি করবেন এখানে আইওএম’র যে সব চিকিৎসকেরা রয়েছে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন আদেশ নির্দেশ মানেন না। তাদের ইচ্ছে হলে চিকিৎসা করেন, নইলে ডাক্তারের চেম্বারে বসে বাজে আলাপ করে সময় কাটায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিকিউরিটি ইসমাঈল জানায়, প্রায় শতাধিক মহিলা ও শিশু রোগী সকাল থেকে হাসপাতালের বারান্দায় বসে, কেউ দাড়িয়ে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছে। আইওএম’র আহাদ নামের একজন চিকিৎসক চেম্বারে থাকলেও রোগী দেখছে না।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানতে চাওয়া হলে ওই চিকিৎসক একই কথা বললেন। সে এখন অসুস্থ, সুস্থ হয়ে উঠলে রোগি দেখবেন। কখন রোগী দেখা হবে জানতে চাওয়া হলে সে কোন সদুত্তোর দেননি। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিজবাহ উদ্দিনের চেম্বারে গিয়ে তার সাথে আলাপ কালে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এনজিওদের নিয়োগকৃত কোন চিকিৎসক হাসপাতালের কমান্ড মানেন না। তারা ইচ্ছামত হাসপাতালে আসে আর চলে যায়। জানতে চাওয়া হলে সরকারি কোন চিকিৎসক হাসপাতালে আছে কিনা? প্রতি উত্তরে তিনি বলেন, ডাক্তার কমলিকা ছাড়া আর কেউ নেই। তিনি বলেন, এ হাসপাতালে কেউ স্থায়ী ভাবে থাকতে চান না। কেন থাকতে চান না জানতে চাওয়া হলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের বাউন্ডারী না থাকায় চিকিৎসকেরা এ হাসপাতালটিকে অনিরাপদ মনে করছেন।
