ভারতে রীতি না মানায় ৯ পুরুষের মাথা ন্যাড়া : ৭ নারীর নখ কর্তন

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৬ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক : সনাতন ধর্মের রীতি না মানায় ১২টি পরিবারের ১৬ জন নারী-পুরুষের মাথা ন্যাড়া এবং নখ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর তাদের প্রতি এমন বিরূপ আচরণ করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার ভারতের ঝাড়খণ্ডের ছোটা গ্রামে এমন ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সেরাইকেলা-খারসাওয়ান জেলার ছয় জনকে আটক করেছে।

পুলিশের জানিয়েছে, ওই গ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার পর নারী-পুরুষেরা প্রচলিত প্রথা পালন‌ করতে রাজি হননি। ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি জানিয়েছে, গ্রামবাসী মনে করত তারা কোনো কালো জাদু কিংবা অতি প্রাকৃত কোনো বিষয়ের চর্চা করতেন। যেকারণে তাদের সঙ্গে এমন অমানবিক আচারণ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার চন্দনকুমার সিনহা বলেন, ‌‘গ্রামের এক বাসিন্দা মারা গেলে হিন্দু প্রথা অনুযায়ী গ্রামের বাকিরা তাদের মাথার চুল কেটে ফেলেন। কিন্তু ১২টি পরিবারের ১৬ জন নারী ও পুরুষ এই প্রথা মানতে রাজি হননি।’

তিনি বলেন,‘তারা হিন্দু প্রথা মানতেন না বা মন্দিরেও যেতেন না। তারা ‘গুরু মা’-এর উপাসনা করতেন। তাদের প্রত্যাখ্যানকে ‘অপবিত্র’ মনে করে একটি বৈঠকে গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নেন, তারা যদি স্নান করে মাথার চুল কেটে ফেলেন তবে তাদের ‘শুদ্ধিকরণ’ ঘটবে। কিন্তু এই নির্দেশও মানেননি ভুক্তভোগীরা। এরপরই গ্রাম প্রধানের উপস্থিতিতে জোর করে ৯ জন পুরুষের মাথা ন্যাড়া এবং ৭ জন নারীর নখ কেটে দেওয়া হয়েছে।’

ভুক্তভোগীদের একজন সরকারি বিদ্যালয়ে রাঁধুনির কাজ কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘ওরা এমনটা করেছে, কারণ ওরা মনে করেন আমরা অতিপ্রাকৃত চর্চা করি।’

পুলিশ জানিয়েছে, আটক অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন গ্রামপ্রধানও। ‘অন্ধ বিশ্বাস উন্মুলান কেন্দ্র’তে আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ‘ফ্রি লিগ্যাল এইড কমিটি’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই কেন্দ্রটি পরিচালনা করে।

সংস্থার সভাপতি প্রেমজি দাবি করেন, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হোক এবং যথাযথ শাস্তি দিয়ে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকানোর প্রচেষ্টা করা হোক। কুসংস্কারাচ্ছন্নতা থেকেই সমাজের দরিদ্র মানুষেরা এমন আচরণ করে বলে জানান তিনি।

পাশাপাশি রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলিরও এই বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে এগিয়ে আসা উচিত তিনি মনে করেন।