ফারুক আহমদ : হোষ্ট কমিউনিটি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবজি বাগান কর্মসূচী বাস্তবায়ন নামে বিভিন্ন প্রজাতির বীজ ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাট করছে এনজিও সংস্থা গুলো। ভাল ও উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করার কথা বলে আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা হতে বিপুল পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করে এনজিও সংস্থা গুলো লুটপাটের মহোৎসবে নামেন এমন অভিযোগ সচেতন মহলের।
জানা যায়, উখিয়া উপজেলার রত্মাপালং, রাজাপালং, হলদিয়া পালং, জালিয়া পালং ও পালংখালী ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে সবজি বাগান করার জন্য প্রতিটি বাড়ি ও কৃষকদের মাঝে বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষিযন্ত্র বিতরণ করা হয়। দায়িত্ব প্রাপ্ত বিভিন্ন এনজিও সংস্থা গুলো গত কয়েক মাস ধরে চাষী ও বাড়ির মালিকদের নিকট বিভিন্ন জাতের এ বীজ বিতরণ করে আসছে এবং বর্তমানেও এ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে।
উখিয়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কর্নসান ওয়ার্ল্ড, ব্র্যাক, মুক্তি, ওয়ার্ল্ড ভিশন, এফএও, ডাবিøউ এফপি,ইউএনএইচসিআর, হলিডো, শেড, রিক ও সুশীলন নামক বেশ কয়েকটি দেশী এবং বিদেশী এনজিও সংস্থা বীজ সরবরাহ করার দায়িত্ব পান । বীজের মধ্যে রয়েছে পুই শাক, লাল শাক, কলমী শাক, দেড়শ, শসা, জিংগা, পেপে, চিচিংগা, বেগুন, মরিচ, তিত করলা, ও চাল কুমড়ার বীজ সরবরাহ করেছে এসব এনজিও সংস্থা। অভিযোগে দেশীয় ও নি¤œমানের খোলা বাজার হতে বীজ সংগ্রহ করে বিভিন্ন ডিলার এবং দোকানদারের সাথে গোপন আতাঁত করে ভালো কোম্পানির মোড়কের প্যাকেট জাত করে সু-কৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভাগ ভাটোয়ারা করছে এনজিও সংস্থা গুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উখিয়া ছাড়াও টেকনাফ উপজেলা একই সাথে ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবজি বাগান প্রকল্প কর্মসূচীর আওতায় এ ধরণের বীজ বিতরণ করা হয়। আর্ন্তাজতিক দাতা সংস্থা হতে এ কর্মসূচী বাস্তবায়নে কয়েক কোটি টাকা অর্থ সংগ্রহ করেছে এসব এনজিও সংস্থা। উখিয়া উপজেলায় শুধু মাত্র গত দু’মাসে ১৬ হাজার পরিবারে বীজ বিতরণ করা হয়।
গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, হাইব্রীড় বীজের পরিবর্ততে দেশীয় অনুন্নত বীজ সরবরাহ করে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এনজিও সংস্থা গুলো। বীজ ও কীটনাশক ডিলারদের সাথে গোপন আঁতাত করে লোক দেখানো কোটেশন দেখিয়ে বিল ভাউচার তৈরি করে বিদেশী সংস্থার দেওয়া অর্থ লুটপাট করছে এসব এনজিও সংস্থা।
রত্মাপালং ইউনিয়নের মাঝের পাড়া গ্রামের চাষী ফরিদুল আলম ও কামাররিয়ার বিল গ্রামের চাষী সিরাজ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এফএও এবং রিক সংস্থা হতে সরবরাহ বীজ দিয়ে সবজি বাগান করে আথিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা। নি¤œ মানের বীজ হওয়ায় ফলন উৎপাদন কম হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের বেশ কয়েকজন উপ-সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, এনজিও সংস্থা গুলো ইচ্ছা মত ও দায় সারা ভাবে কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। কৃষকদের মাঝে হাইব্রীড বীজ সরবরাহ করার পরামর্শ দিলেও এনজিও গুলো তা কর্ণপাত না করে দেশীয় অনুন্নত বীজ সরবরহ করায় চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, মুক্তি সংস্থা সহ কয়েকটি এনজিও সংস্থা হোষ্ট কমিউিনিটি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবজি প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে বীজ ক্রয়ে কোটি টাকার দৃর্নীতি করেছে। তিনি আরও বলেন, কম মূল্যে নি¤œ মানের বীজ সংগ্রহ করে ভালো কোম্পানীর প্যাকেট জাত করে এসব বীজ লোক দেখানো বিতরণ করছে আর হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএন সংস্থার এফএও এর কক্সবাজারস্থ অফিসের কর্মকর্তা হাসান বলেন, কৃষি অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অফিসের সাথে সমন্বয় রেখে মানসম্মত বীজ চাষীদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সঠিক সময়ে বোপন ও রোপন না করায় হয়ত বীজ গুলো গজাঁয়নি। তাই আমরা কৃষকদেরকে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ব্র্যাক সহ কয়েকটি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তারা এ কর্মসূচীর সাথে সম্পৃত নয় বলে জানান।