আদালত প্রতিবেদক :
কক্সবাজার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনহা হত্যা মামলার আসামী বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও কথিত সাংবাদিক, কপু নেতা নূর হোসেনসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ -৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে টেকনাফ উপজেলার ডেইলপাড়ার বাসিন্দা মোঃ আজিজ ও একই ইউনিয়নের নাজির পাড়ার নূর মোহাম্মদ নামের দুই ব্যক্তিকে কথিত ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ এনে এ দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
নিহত মোঃ আজিজের মা হালিমা খাতুন ও নুর মোহাম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগম বাদি হয়ে এই দুই মামলার আবেদন করেন। বাদি পক্ষের আইনজীবি নূর হোসেন নাহিদ ও মোঃ মোস্তফা গণমাধ্যম কর্মীদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত মোঃ আজিজের মামলার বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর টেকনাফ থানার একদল পুলিশ মোঃ আজিজ, নুর হাসান ও আবুল খায়ের নামের তিন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায়। পরে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ডেইলপাড়া এলাকার কথিত সাংবাদিক ও প্রদীপের পাব্লিক এজেন্ট কপু নেতা আমির হোসেনের ছেলে নূর হোসেন প্রদীপের নির্দেশে আজিজের পরিবারের নিকট ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবী করে। নিরুপায় হয়ে ছেলের প্রাণ বাঁচাতে কোন ভাবে মামলার আসামী নূর হোসেনের হাতে ৫০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু ১৯ অক্টোবর রাতে টেকনাফের মহেশখালীয়াপাড়া নৌ ঘাট এলাকায় আজিজকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়।
নুর হোসাইন ছাড়া এই মামলার বাকি আসামীরা টেকনাফ থানায় কর্মরত সাবেক পুলিশ সদস্য।
অপরদিকে, নূর মোহাম্মদের মামলার বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৯ মার্চ বীজ ও সার আনতে কৃষি অফিসে গেলে নুর মোহাম্মদকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন ওসি প্রদীপসহ অন্যরা। তাই বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ভাবে যোগাড় করে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু ২১ মার্চ রাতে নূর মোহাম্মদকে কয়েকজন পুলিশ মেরিন ড্রাইভ সড়কের রাজারছড়া ঝাউবাগানে নিয়েগুলি করে হত্যা করে।
এদিকে ভূক্তভূগীদের অভিযোগ, টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির সাধারন সম্পাদক ও নাফ টিভি সম্পাদক কথিত সাংবাদিক কপু নেতা নূর হোসেন সেন্টমার্টিন, সদরের ডেইল পাড়া এলাকার তিন ব্যক্তির কাছ থেকে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে ১৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
টেকনাফ ডেইলপাড়া এলাকার সিরাজুল হক নামে অপর এক ব্যক্তির কাছ থেকে তার ছেলেকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার কথা বলে নেন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
এভাবে নুর হোসেন প্রদীপ ও পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকের দাবী, কথিত সাংবাদিক নূর হোসেন প্রদীপ কুমার দাশের অর্থায়নে তার অপকর্ম আড়াল করতে অনুমতি বিহীন ফেইসবুক ভিত্তিক নাফ টিভি নামে একটি অনলাইন টিভিতে প্রদীপের ফিরিস্তি ধারাবাহিক প্রচার করতো। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেই সু্যোগে সাধারণ মানুষকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে এসব চাঁদাবাজি করতো।