প্রশাসনের স্বদিচ্ছার অভাবে ইয়াবা রোধ করা যাচ্ছে না …এমপি বদি

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৭ years ago

টেকনাফে মাসিক আইন শৃংখলা ও চোরাচালান কমিটির সভায়

মোঃ আশেকউল্লাহ ফারুকী, টেকনাফ :
উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি বলেছেন, ইয়াবা একটি জাতীয় সমস্যায় পরিনত হয়েছে। এটি শুধু টেকনাফের সমস্যা নয়। এসমস্যা উত্তরনে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। এ কারণে টেকনাফের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটছে। হত্যা, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারামারী, জায়গা জমি জবরদখল, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা, ইয়াবা সেবনকারী পুত্রের অত্যাচার ও নির্যাতনে পিতা-মাতা আক্রান্ত ছাড়াও ইয়াবা ব্যবসায়ীর কালোটাকার প্রভাবে সমাজের নিরীহ মানুষ জিম্মি। বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যুব সমাজ এ কাজে বেশি ধাবিত হয়ে তাদের মূল্যবান জীবন হারাচ্ছে। ইয়াবার কারণে মানব সম্পদ এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। কোন অবস্থাতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়া যাবেনা।

১৯ ডিসেম্বর টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মাসিক আইন শৃংখলা ও চোরাচালান প্রতিরোধ উন্নয়ন কমিটির সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহেদ হোসেন সিদ্দীকির সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

তিনি আরো বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন প্রশাসনের সাথে উঠাবসা করছে এবং সংশ্লিষ্ঠদের ম্যানেজ করেই ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে ইয়াবা ব্যবসা ঠেকানো যাচ্ছেনা।

সীমান্তের যে সব পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা ঢুকছে, সেখান থেকে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে পাচার হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে এর চাহিদা বৃর্দ্ধি পাওয়ায় ইয়াবা ব্যবসা ও পাচার বন্ধ রোধ যাচ্ছেনা।

এমতাবস্থায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া যাবেনা।

তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই রাষ্ট্রের নাগরিক ও দায়িত্বশীল হিসাবে ইয়াবার বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স থাকতে হবে এবং ওদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে। ইয়াবার উপাজির্ত অর্থের দুনিয়া ও আখিরাতে কোন শান্তি নেই। এ অর্থের দ্বারা ইবাদত কবুল হবেনা। কাজেই প্রশাসনের সহযোগীতা ছাড়া ইয়াবা কোন মতেই বন্ধ হবেনা।

বিশেষ অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহমদ বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা নাফ নদীর রুট পরিবর্তন করে সাগর উপকূল বিভিন্ন মৎস্য ঘাট দিয়ে প্রতিনিয়তই লাখ লাখ ইয়াবা ঢুকাচ্ছে। ইয়াবা ব্যবসার কারণে টেকনাফের নাফ-নদের জেলেরা মাছ শিকার করতে না পেরে বর্তমানে তাদের উপর চলছে দুর্দিন।

পৌর মেয়র হাজী মোঃ ইসলাম বলেন, পৌর এলাকায় ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে অলিতে গলিতে দোকান পাট ও মোটর সাইকেলও। ষ্টেশানে টমটম, ব্যাটারী চালিত রিক্সাও বাড়ছে। যত্রতত্র স্থানে গাড়ী রাখায় নিত্যদিন যানজট হচ্ছে।

এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওঃ রফিক উদ্দীন, তাহেরা আক্তার মিলি, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ও’সি) মোঃ মাঈন উদ্দীন, সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ, বাহারছড়া চেয়ারম্যান হাজী মাওঃ আজিজ।

এতে উপস্থিত ছিলেন, টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), আঃলীগ নেতা জহীর হোসেন এম,এ, সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মী বৃন্দ।

উল্লেখ্য অনুষ্ঠানের পূর্বে, উপজেলা পরিষদ চত্তরে হোয়াইক্যং মধ্যম হ্নীলার নয়াপাড়ার, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও মালিকানা দাবী নিয়ে একই এলাকার জনৈক্য মামলাবাজ মনুমিয়া মিথ্যা চাঁদাবাজী মামলা করায় এর প্রতিকার চেয়ে শতাধিক জনতা স্থানীয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদীকে ঘেরাও করে রাখে। পরে তিনি এর সমাধান করার আশ্বাস প্রদান করেন। পরে উপজেলার চেয়ারম্যান জাফর আহমদের সভাপতিত্বে উপজেলা উন্নয়ন সমন্নয় কমিটির সভায় বিভিন্ন দপ্তরের কাজের অগ্রগতি ও পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।