প্রখ্যাত গায়িকা ফেরদৌসী রহমান ৮১ বছরে পা রাখলেন

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৪ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক : উচ্চাঙ্গসংগীত, লোকগান, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক ও সিনেমার গান— সব ধরনের বাংলা গানেই অবদান রয়েছে ফেরদৌসী রহমানের। সংগীত প্রশিক্ষণেও তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। খ্যাতিমান এ সংগীতশিল্পীর ৮০তম জন্মবার্ষিকী সোমবার। অর্থাৎ ৮১ বছরে পা রাখলেন।

১৯৪১ সালের ২৮ জুন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কোচবিহারে ফেরদৌসী রহমানের জন্ম। তার বাবা বাংলা গানের কিংবদন্তি গায়ক আব্বাসউদ্দীন।

করোনার আবহে এবারের জন্মদিনে নেই তেমন কোনো আয়োজন। থাকতে চান সবার প্রার্থনা ও ভালোবাসায়।

ফেরদৌসী রহমান গণমাধ্যমকে বললেন, “দেড় বছর হলো বাসাতেই আছি। কোথাও বের হচ্ছি না। কবে যে করোনার হাত থেকে রেহাই পাবো জানি না। এমন সময়ে ঘটা করে জন্মদিন পালন করার মানেই হয় না। সবার কাছে মিনতি, আমার জন্য দোয়া করবেন।”

বাবার হাত ধরেই ফেরদৌসীর গানের ভূবনে প্রবেশ। ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ইউসুফ খান কোরেইশী, কাদের জামেরী, গুল মোহাম্মদ খান প্রমুখ সঙ্গীতজ্ঞের কাছেও তালিম নিয়েছেন তিনি।

প্রায় ছয় দশকের গানের ক্যারিয়ারে শুধু গায়িকা হিসেবে নন, সুরকার-সংগীত পরিচালক হিসেবে ছড়িয়েছেন দ্যুতি, পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও। আশির দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘এসো গান শিখি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে ‘খালামণি’ হিসেবে পরিচিতি পান। এখনো তাকে অনেকেই খালামণি বলে ডাকেন।

মাত্র ৮ বছর বয়সে রেডিওতে ‘খেলাঘর’ নামের অনুষ্ঠানে অংশ নেন ফেরদৌসী। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান করেন তিনি।

ফেরদৌসী রহমান বাংলাবাজার স্কুল থেকে এসএসসি, ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

১৯৬০ সালে ফেরদৌসী রহমান ইউনেস্কো ফেলোশীপ পেয়ে লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিক থেকে ৬ মাসের সংগীতের ওপর স্টাফ নোটেশন কোর্স সম্পন্ন করেন।

প্রায় ২৬০টি সিনেমাতে গান গেয়েছেন তিনি। তিনটি লং প্লে, ৫০০টি ডিস্ক রেকর্ড, প্রায় বিশটি ক্যাসেট’সহ পাঁচ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন এ গুণী শিল্পী।

ফেরদৌসী রহমান নজরুল ইন্সটিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সংগীত ভুবনে অবদান রাখার জন্য তিনি জাতীয় পর্যায়ে নানাভাবে সন্মানিত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে আছে লাহোর চলচ্চিত্র সাংবাদিক পুরস্কার (১৯৬৩ সাল), প্রেসিডেন্ট প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার (১৯৬৫ সাল), টেলিভিশন পুরস্কার (১৯৭৫), জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক (১৯৭৭), বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার (১৯৭৬) ও একুশে পদক (১৯৭৭ সাল)। এ ছাড়া লাভ করেন নাসিরউদ্দিন গোল্ড মেডেল ও মাহবুবুল্লাহ গোল্ড মেডেল।

এই গায়িকা ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রেজাউর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের রয়েছে দুই ছেলে রুবাইয়াত ও রাজিন।