পাহাড়ি অঞ্চলে ধর্মীয় শিক্ষায় অনগ্রসর এলাকায় নতুন সংযোজন নারিচবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৬ years ago

শামীম ইকবাল চৌধুরী : আলোকিত মানুষ তৈরির কারখানা হিসেবে নতুন সংযোজন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জনবহুল ও রাবার শিল্প নগরী হিসেবে খ্যাত বাইশারী ইউনিয়নের নারিচবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, শিক্ষায় অনগ্রসর অত্র পাহাড়ি অঞ্চলে ইসলামি শিক্ষা তথা কোরআন হাদিসের শিক্ষা বিস্তারের মহান ব্রত নিয়ে কক্সবাজারের পীরে কামেল মাওলানা আব্দুল গনী নুরী ২০০৩ সালে নারিচবুনিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা চালু করার উদ্যোগ নেন। এ গুণী ব্যক্তির আহবানে সাড়া দিয়ে এলাকাবাসীর সার্বিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। মাদ্রাসাটিতে ইছালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে জমি দান করেন স্থানীয় বাসিন্দা মরহুম ইসলাম সওদাগর। প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে অসমান্য অবদান রাখেন মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিক্ষানুরাগী মোঃ শাহাব উদ্দিন।
মাদ্রাসা সুত্রে আরো জানা যায়, মাদ্রাসাটি ২০১৮ সালে জুনিয়র দাখিলে রুপান্তরিত হয় এবং ২০১৯ সালের শুরু থেকেই দাখিলে রুপান্তর ঘোষিত হয়। মাদ্রাসাটি দাখিল (বাস্তবায়িত) হলেও ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে ৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রায় ২২০ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়ণ করছেন। ২০১০ সাল থেকেই ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছে মাদ্রাসাটি। ২০১৮ সালের ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় ৩ জন এ+ এবং ৯ জন শিক্ষার্থী এ- পেয়েছে। এছাড়া ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সেরা শিক্ষার্থী হয়েছেন জয়নাল আবেদীন নামের এক শিক্ষার্থী।
শিক্ষিকা জুলেখা বেগম বলেন- সাধারন মানুষের সহযোগীতায় চলে আসছে মাদ্রাসাটি। বেতন ভাতাধিও অনেক মাসের বাকী রয়েছে। তারপরও এলাকা শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে অনবরত যাত্রা। তিনি আরো বলেন- বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে মাদ্রাসাটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদেক হোছন বলেন- ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বসার পর্যাপ্ত বেঞ্চ নেই। তাছাড়া ভবন সংকটের কারণে একই রুমে দুই ক্লাসের পড়ালেখা একসাথে চলাতে হয়। এতে পড়ালেখায় বিঘœ হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচন্ড গরমে ক্লাস করা অসহনীয় হয়ে উঠে।
ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম জানান- এলাকার সাধারন মানুষের সহযোগীতায় এগিয়ে যাচ্ছে মাদ্রাসাটি। ইতিমধ্যে পুরাতন টিনসেট ও বাঁশের বেড়ার ঘরটি সংস্কার করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও সহযোগীতার ধারা অব্যাহত থাকবে।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন- মাদরাসাটির অবকাঠামোগত সমস্যা নিরসণে ২০১০ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে দুই রুম বিশিষ্ট টিন সেট একটি ঘর নির্মিত হলেও ক্লাস ও শিক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ায় এক রুমেই দুইটি ক্লাস একসাথে নিতে হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত হচ্ছে।
মাদ্রাসা সুপার মাওলানা জহিরুল হক বলেন- মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে শিক্ষক, শ্রেণী কক্ষ, বেঞ্চ ও খেলার মাঠ সংকট রয়েছে। দাখিল ১০ শ্রেণি পর্যন্ত খোলার সম্ভাবনা থাকলেও ভবন ও শিক্ষক সংকটের কারণে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন- বর্তমানে মাদ্রাসাটির ইবতেদায়ী শাখা জাতীয়করণের তালিকায় প্রথমদিকে রয়েছে। তhিনি মাদ্রাসাটির স্বীকৃতি, দাখিল পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি পেতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।