শামীম ইকবার চৌধুরী : ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন (ক্রিসমাস) আজ ২৫ ডিসেম্বার ।
পৃথিবী তথা মানবতার কল্যাণে মহান যিশুর শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়া হবে মানুষে মানুষে। এই লক্ষ্য নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার এক মাত্র দৌছড়ি ইউনিয়নের বাইসাং ত্রিপুরা পাড়ার “সাধু পৌল ক্যাথালিক গির্জায় প্রার্থনা মধ্যে দিয়ে ক্রিসমাস (বড়দিন) পলন করেছে খ্রস্টান ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা গোষ্ঠীরা। এই দিন ব্যাপী অনুষ্টানের খবর পেয়ে সেই দূর্গম পাহাড় বেয়ে অনুমানিক ৪৫ কি:মি: অতিক্রম করে ক্রিসমাস বড়দিনের অনুষ্টানে অংশগ্রহণ করেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো,শফি উল্লাহর নেতৃত্বে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষেরা।
আলোকসজ্জা, ক্রিমসাসট্রি, ধর্মীয় গান নিয়ে সাংস্কৃতি সন্ধ্যা, সান্তাক্লজের উপহার প্রদানে সময় কেটেছে আনন্দে। সকালে বাইসাং ত্রিপুরা পাড়ার “সাধু পৌল ক্যাথালিক চার্চ” (গির্জায়) বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে দিনের শুরুতে কেক,বিভিন্ন সুস্বাদু পিঠা ও খাবারের আয়োজনটি যেন পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মেলান্ধন।
আর এদিকে স্থানীয় নিরাপত্তা কমিটির সভাপতি ও দৌছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো,হাবিব উল্লাহ সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ও আলোচ্যক ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো,শফি উল্লাহ।
তিনি বলেন, সম্প্রীতির বান্দরবানের পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুরএমপি আমাদেরকে একটি শ্লোগান শিখিয়েছেন ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবাইর’। আমার শিক্ষা জীবনে পাঠ্যপুস্তক থেকে জানতে পারি, দুই হাজার বছর আগে এই শুভ দিনেই পৃথিবীকে আলোকিত করে জম্মগ্রহণ করেন খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে কুমারিমাতা মেরির কোলে জম্ম হয়েছিলো যিশুর।দিনটি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য ক্যনু ওয়ান চাক্, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মং হ্লা ওয়ে মার্মা,উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো,ইমরান মেম্বার, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি শামীম ইকবাল চৌধুরী,ক্রীড়া সসম্পাদক সাংবাদি মো,আব্দুর রশিদ, উপজেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি মো,মিজানুল করিম,আওয়ামীলীগ নেতা মই অং মার্মা হেডম্যান, স্থানীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য থোয়াই চং চাক্,নুরুল আলম মেম্বার ক্যও হ্লা চিং চাক্,অনুষ্টান কমিটির সদস্য সত্যরাম ত্রিপুরা,অভিরাম ত্রিপুরা প্রমূখ।
অনুষ্টানের শেষে প্রধান অতিথি খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা গোষ্ঠির মাঝে সৌর বিদ্যুৎ ও কম্বল (শীতবস্ত্র) প্রদান করেন। আর এদিকে দৌছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো, হাবীব উল্লাহর উদ্যোগে ক্রসমাস বড়দিনে চাক ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মাঝে নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দ্বারা উন্নত চিকিৎসা ও উন্নতমানের ঔষধ বিতরণ করেন প্রধান অতিথি অধ্যাপক মো,শফি উল্লাহ।
অপরদিকে সত্যরাম ত্রিপুরা বলেন,খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, মানবজাতিকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যিশুখ্রিস্টের জন্ম হয়। তার জন্মদিনটিকে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা অর্থাৎ আমরা তাই ধর্মীয় নানা আচার ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করি। এটি আমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। তাই আজ গোটা বিশ্বের মতো আমরা এই দূর্গম পাহাড়ে বসতি করে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিসেবে নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালন করে আসছি সবচেয়ে বড় এ উৎসব।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বতিরাম ত্রিপুরা বলেন, বড়দিন উপলক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। এর পরও কোনো কিছুকে ছোট করে দেখা হচ্ছে না। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন ঘিরে এই গহীন পাহাড়-জঙ্গল এলাকাতেও পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিলো।