শামীম ইকবাল চৌধুরী : নাইক্ষ্যছড়ি মদিনাতুল উলুম মাদরাসার বিভিন্ন ডুকোমেন্ট পত্র জালিয়তি ঘটনার মূল হোতা অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইনের বিরুদ্ধে অবশেষে মামলা হয়েছে।
সূত্রে জানাযায়, সৈয়দ হোছাইন একাডেমিক,মাদরাসা পরিচালনা কমিটি ও অভিজ্ঞতা সনদ জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এক ছাত্রীকে অবৈধ মেলা-মেশা, পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল হওয়ায় কৌশলে বিয়ে করাসহ সৈয়দ হোছাইনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সৈয়দ হোছাইন (৪২)কে বিবাদী করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় (৭-২৪/১২/১৯ইং) মামলা দায়ের করেন। বিবাদী উপজেলার মদিনাতুল উলুম মডেল ইনিস্টিটিউট আলীম মাদরাসার বর্তমান অধ্যক্ষ।
অনুসন্ধানে জানাযায়, সরেজমিন ও গোপন তদন্তে পত্র জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়। আরও জানাযায়, নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল ইনস্টিটিউট আলীম মাদরাসার নির্বাহী কমিটির ২জন শিক্ষানুরাগী সদস্য মনোনয়নের জন্য জেলা প্রশাসকের একটি পত্র জালিয়াতির আশ্রয় নেয় অধ্যক্ষ সৈয়দ হোছাইন। ২০১৮ সনের ১৩ নভেম্বার ০৫.৪২.০৩০০.২০৯.০২.০০৯.১৮-৩৩৬ স্মারক মূলে নির্বাহী কমিটির জন্য মোহাম্মদ শফি উল্লাহ ও ছৈয়দ আলমকে নির্বাহী কমিটির সদস্য করে মাদরাসা বোর্ড থেকে অনুমোদন গ্রহণ করান ওই অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইন। প্রকৃতপক্ষে অনুমোদন নেওয়া সেই পত্রটি বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইস্যু করেননি। জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত উপজেলার আশারতলী এলাকার অন্য একটি মাদ্রাসার স্মারক নাম্বার জালিয়তি করে মাদরাসা অধ্যক্ষ সৈয়দ হোছাইন নিজেই পছন্দের ব্যক্তির নাম বসিয়ে পত্রটি জালিয়তি করেন।
আর এদিকে, মাদরাসার শিক্ষক,অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিক সমাজ অধ্যক্ষ সৈয়দ হোছাইনের নানা অনিয়ম, নারীলোভী ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে এই প্রতিবেদকে জানান, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত অভিযোগ এবং মানববন্ধন করে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের অপসারণ দাবী করে আসচ্ছিলেন এলাকাবাসী।
অত্র অভিযোগ ও দাবী গুলো স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে ধামাচাপা দেন সৈয়দ হোছাইন।
এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের তদন্তে আনীত অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ার পর ঘটনার পাঁচ মাসের মাথায় জালিয়াতির অভিযোগে প্রশাসানের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হলো। তবে অভিভাবকেরা জানান, এ অধ্যক্ষের চরিত্র পুরোটাই কালিমালিপ্ত। সর্বচ্চো শাস্তির দাবীও জানান তারা।
স্থানীয় রাজনীতিবিদরা জানান, আশি নব্বয় দশকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির মাধ্যমে জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় হন অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইন । তিনি বর্তমান জামায়াতের সাথে গোপনে আতাঁত রয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানাযায়।
এই প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন,মদিনাতুল উলুম মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক লিখিত অভিযোগ করে আসচ্ছিল এলাকাবাসীরা । অনেক অভিযোগ প্রমাণও হয়েছে। তারমধ্যে পত্র জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পক্ষ হয়ে মামলাটি করা হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মর্কর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন মামলা বিষয়টি স্বিকার করে বলেন জেলা প্রশাসকের পত্র জালিয়াতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাদী হওয়া মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। মামলা বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।