টেকনাফ টুডে ডেস্ক : রেশমা নাহার রত্না একজন শিক্ষক এবং পর্বতারোহী। তিনি নড়াইল শহরের চিত্রাপাড়ের স্বপ্নচারী মানুষ। বাবা এস আফজাল হোসেন মুক্তিযুদ্ধের বীরবিক্রম। শিক্ষকতার পাশাপাশি পাহাড় হচ্ছে রত্নার প্রেম। কারণ পাহাড়ের কোলে, সাগরের কূলে কেটেছে তার ছেলেবেলা। ২০১৬ থেকে সেই প্রেম যেন হৃদয়ের গভীরে গেঁথে আছে। তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ শিক্ষিকা গত তিন বছরে আরও বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছেন পাহাড়ের। তার স্বপ্ন, সফলতা ও পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ-
আপনার ছেলেবেলা কেমন কেটেছে?
রেশমা নাহার রত্না: ছেলেবেলায় আমি খুব ডানপিটে ছিলাম। সুযোগ পেলেই গাছে চড়তাম। নবগঙ্গা পাড়ি দিয়ে ফল পেড়ে আনতাম। পাড়ার ছেলে-মেয়েদের সাথে দাঁড়িয়াবান্ধা, বৌচি, গোল্লাছুট, ক্রিকেট খেলতাম।
কবে থেকে পর্বতারোহনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন?
রেশমা নাহার রত্না: ২০১৬ সালে আমি একটি পর্বতারোহন ক্লাবের সাথে যুক্ত হই। সেই সুবাদে কেওক্রাডং চূড়ায় যাওয়া হয়েছে। সে-ই প্রথমবারের মতো কোন পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়া। এভাবেই শুরু। এরপর কেনিয়ার মাউন্ট কেনিয়া লেনানা পিক (৪৯৮৫ মিটার) সামিট ছিল আমার প্রথম অভিযান।
শিক্ষকতার পাশাপাশি পর্বতারোহন করতে গিয়ে কোন বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কি?
রেশমা নাহার রত্না: যেহেতু সরকারি চাকরি করি, তাই সরকারি নিয়ম মেনে ছুটি নিয়ে তবেই যেতে হয়। অসুবিধায়ও পড়তে হয় প্রচুর। যদি স্পোর্টস পারসন হিসেবে ছুটি মঞ্জুর হতো, তবে আর কোন অসুবিধাই থাকত না। পর্বতের পথে বিচরণ আরও সহজ হতো।
পর্বতারোহন নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
রেশমা নাহার রত্না: দেখুন, আমি খুব ছোট একটা চাকরি করি। পর্বতে যাওয়ার মতো যথেষ্ট আর্থিক সামর্থ আমার নেই। সরকারি বা বেসরকারি যে কোনভাবে সহায়তা পেলে অনেক কাজ করা সম্ভব। অন্য অনেক দেশের তুলনায় পর্বতারোহন নিয়ে বাংলাদেশের অর্জন তুলনামূলকভাবে খুব কম। এ পতাকায় আরও কিছু অর্জন জুড়ে দিতে চাই। আপাতত ৫টি মহাদেশের ২য় সর্বোচ্চ চূড়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। এর জন্য পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এটা শেষ হলে বলতে পারবো এরপর কী করতে যাচ্ছি।
পর্বতারোহনের জন্য কোথাও কি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন?
রেশমা নাহার রত্না: পর্বতারোহন বিষয়ে পড়াশোনা করেছি। মৌলিক ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। ভারতের পর্বতারোহন প্রশিক্ষণ দানকারী প্রতিষ্ঠান নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে।
পর্বতারোহনে কাকে অনুপ্রেরণা মনে করেন?
রেশমা নাহার রত্না: আমাদের জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার অপরিসীম ডেডিকেশন আমাকে খুব ভাবায় ও উৎসাহ জোগায়। মনে জোর আসে। আমার জেলার বলে হয়তো তাকে বেশি অনুপ্রেরণার ব্যক্তিত্ব মনে হয়। আর পর্বতারোহী অনেকেই আছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন ক্রিশ্চিয়ান স্ট্যাংগল। মাউন্টেইনে মুগ্ধ হয়েছি সৌরভ রাউটেলাকে দেখে। আরেকজন অনুপ্রেরণার ব্যক্তিত্ব হলেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার।