দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায়ও দুধে ‘অ্যান্টিবায়োটিক’ মিলেছে

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

ডেস্ক নিউজ |

দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করেও বিভিন্ন কোম্পানির দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এবারের ফলাফল আগের মতোই উদ্বেগজনক। পার্থক্য শুধু প্রথম দফায় পাওয়া গিয়েছিল তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক, এবার চারটি।

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।

একইসঙ্গে বাজারে প্রচলিত সাত কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ নিয়ে যে গবেষণা হয়েছে তা নিয়ে কোনো চক্রান্ত না খোঁজার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায়ও বাজার থেকে ১০টি নমুনা নিয়ে ১০টিতেই অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়ার কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ফারুক।

তিনি বলেন, আমরা একই গবেষক দল একই জায়গা থেকে একই কোম্পানির নমুনা সংগ্রহ করে একই যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষা করেছি। ফলাফল আগের মতোই উদ্বেগজনক ছিল। পার্থক্য শুধু প্রথম দফায় পাওয়া গিয়েছিল তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক, এবার চারটি।

গত ২ জুলাই থেকে তারা এই দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা চালান বলে জানান ফারুক।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সপ্তাহে আমরা এই পরীক্ষাটি পুনরায় সম্পন্ন করেছি। প্রথমবারের মতো এবারও পূর্বোক্ত ৫টি কোম্পানির ৭টি পাস্তুরিত প্যাকেটজাত দুধের একই জায়গা থেকে সংগৃহীত নমুনা এবং একই জায়গা থেকে খোলা দুধের সংগৃহীত ৩টি নমুনা, অর্থাৎ সর্বমোট ১০টি নতুন নমুনায় অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি একই নিয়মে একই উন্নত ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।

‘এর ফলাফল আগের মতোই উদ্বেগজনক। এবারও সবগুলো নমুনাতেই অ্যান্টিবায়োটিক শনাক্ত করা গেছে। অ্যান্টিবায়োটিকের মোট সংখ্যা ছিল ৪টি (অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, এনরোফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং লেভোফ্লক্সাসিন)। এর মধ্যে আগের বারে ছিল না এমন অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে ২টি (অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ও এনরোফ্লক্সাসিন)।

এতে বলা হয়, ১০টি নমুনার মধ্যে তিনটিতে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে চারটি, ছয়টিতে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে তিনটি এবং ১টিতে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে দুটি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আমরা ভবিষ্যতেও এই পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর ফলাফল জনস্বার্থে প্রকাশ করার চেষ্টা করব।

ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নাকচ করে অধ্যাপক ফারুক বলেন, জনস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগজনক এ সমস্যাটি সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার পরিবর্তে বিশেষ কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে আর বিদেশি চক্রান্ত খুঁজতে হবে না।

প্রসঙ্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের এই অধ্যাপক গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাতটি প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধের নমুনা পরীক্ষা করে সেগুলোতে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানানোর পর শুরু হয় আলোচনা।

তাদের ওই গবেষণার সঙ্গে বিভাগের সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান।

পরে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর তাদের ওই গবেষণা নিয়েই প্রশ্ন তোলে। সরকারি কর্মকর্তাদের পাশে রেখে সংবাদ সম্মেলনে দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, এই গবেষণা দেশের দুগ্ধ শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক।

গবেষকরা বলছেন এসব এন্টিবায়োটিক মানুষের শরীরে গেলে পরে ঔষধ হিসাবে সেসব এন্টিবায়োটিক আর মানুষের শরীরে কাজ করবে না। এতে সামান্য অসুখই মানুষের মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়াবে।