নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের ভাবমূর্তি উজ্জল করার জন্য দলের ভেতরে গজিয়ে উঠা আগাছা-পরগাছা পরিষ্কার করতে অ্যাকশন শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অ্যাকশন শুধু ঢাকা নয় সারাদেশে চলবে।
এই অ্যাকশনের মাধ্যমে টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে।
আজ শনিবার বিকালে কক্সবাজার সাগর পাড়ের পর্যটন গলফ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা কালে এসব বলেন। তিন দিনের সফরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আজ শনিবার কক্সবাজার এসে পৌঁছেছেন।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মাস্তান যতই বড় হোক, যত বড় নেতাই হোক, যত বড় প্রভাবশালী হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধ ও অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন শেখ হাসিনা। সব অপকর্মের শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আওয়ামী লীগের এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দলের অগণিত কর্মীরাই হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রাণ।
কর্মীদের প্রাণশক্তির জন্যই শেখ হাসিনা ওয়ান-ইলেভেনের সেই দুঃসময় থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। এভাবে এই কর্মীরাই আওয়ামী লীগকে বাঁচিয়ে রেখেছে। দুর্যোগে- দুঃসময়ের কর্মীরাই হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি।
সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা এক সংগ্রাম শুরু করেছি। যে সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাড়ককে অবস্থান করছে। অনেক অর্জন, অনেক উন্নয়ন আমরা করেছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আজ বিশ্বজুড়ে সমাদৃত, প্রশংসিত একজন রাষ্ট্রনায়ক হচ্ছেন শেখ হাসিনা। তার এই উন্নয়নের জন্য, অর্জন পরিশ্রম, সততা, সাহস ও উদারতার জন্য সারা বিশ্বে আজ শেখ হাসিনা অত্যন্ত সমাদৃত। দেশে আশ্রয় নেয়া
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানবতার দিক বিবেচনায় নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তার মানে এই নয় যে, তাদেরকে আমরা চিরদিন রাখবো। সেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব না কিন্তু এই নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি। তারা ওই সময় রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্বের কাছে নালিশ দিয়েছিল। আর এখন তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কিন্তু আমরা তা হতে দেবো না। তাদেরকে যে কোনো মূল্যে ফেরত পাঠাতে কাজ করছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরো অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি রোহিঙ্গাদের উস্কানি দিচ্ছে যাতে তারা অস্থিরতা সৃষ্টি করে। অনুরুপ মিয়ানমারকেও বিএনপি উস্কানি দিচ্ছে যাতে তারা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়।
দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে কোনো মূল্যে দলের এই সংকটে ও সন্ধিক্ষণে দলের আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বরের জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে করা হবে। তাই আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। কেউ কোনোভাবে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। কলহ, কোন্দল পরিহার করে আওয়ামী লীগকে এক রাখবেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা। প্রতিনিধি সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম, উপ-দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সভায় স্থানীয় এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, জাফর আলম ও সাইমুম সরওয়ার কমল এবং জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
কালেরকন্ঠ