টেকনাফ টুডে ডেস্ক : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সব ঝুপড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গত দুদিনের আগুনে পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঝুপড়িগুলো পুড়ে যায়।
ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা জানান, বৃহস্পতিবার সারা রাত দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক হাজার রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়।এতে হতাহতের খবর পাওয়া গেলে ও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেনি কেউ।
স্থানীরা বলেন, গোলাগুলির কারণে স্থানীয়রা শঙ্কিত।সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)। গত তিন দিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। এতে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে।বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় কবর দেওয়া হয়েছে অনেককে।
তারা বলেন, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সংগঠন। তারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়ায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কোনারপাড়ায় রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়ে আসছে। তারা নতুন করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে ধারণা। অগ্নিকাণ্ডের পর কিছু রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ভেতরে ঢুকে যান। অল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা ঘুমধুম ইউনিয়নের কোনারপাড়া, উওরপাড়া, পশ্চিমপাড়ার বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা এখনো ফিরে যাননি।
তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা আলী আকবর বলেন, অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনোরকম দিন অতিবাহিত করছি। এখানে শান্তিতে নেই। মিয়ানমারেও ঝামেলা।
স্থানীয় বাসিন্দা জহির আহমদ বলেন, বৃহস্পতিবার সারা রাত গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। কোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাকি অংশও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সিএনজি চালক আব্দুর রহিম বলেন, আজকে (শুক্রবার) একটু কম ছিল (গেলাগুলি)।
স্থানীয়রা বলেন, তুমব্রু কোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা যেন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না যায় সে ব্যাপারে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
রোমেন শর্মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শূন্যরেখায় বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা বাহিনীর হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। ফলে সেখানকার প্রকৃত পরিস্থিতি জানা যাচ্ছে না। তবে যতটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, ঘটনায় আশ্রয়শিবিরে প্রায় ৫৫০টি বসতঘর পুড়ে গেছে। ৭০ থেকে ৮০টি ঘর এখনো অক্ষত।
