আব্দুল মাবুদ, শাহপরীরদ্বীপ প্রতিনিধি :
টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়ক দ্রুত সংস্কারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার(২৩ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে শাহপরীরদ্বীপের উত্তর পাড়ার ভাঙা এলাকায় এই মানব বন্ধন অনুষ্টিত হয়েছে। এতে শাহপরীরদ্বীপের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন। এতে টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়কের হারিয়াখালী থেকে উত্তর পাড়া পর্যন্ত ৫.১৫ কিলোমিটার বিচ্ছিন্ন সড়ক সংস্কারে একনেকে অনুমোদিত প্রায় ৬৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত শাহপরীরদ্বীপের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহেদ হোসেন বলেন, টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়কের হারিয়াখালী থেকে উত্তর পাড়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক বিগত ৭ বছর ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ২০১২ সালে পশ্চিমের বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকে সড়কটি বিলীন হয়ে গিয়েছিল। এখন বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পথে, জোয়ারের পানিও ঢুকেনা তবু সড়কটি দ্রুত সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেই। তাই আমরা মানববন্ধনের মাধ্যমে দাবি জানাচ্ছি, শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কের ভাঙা অংশটি দ্রুত সংস্কারের জন্য।
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত এলাকাবাসী বলেন, শাহপরীরদ্বীপের ৪০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক। কিন্তু এ সড়কের হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পথ বিলীন হয়ে যাওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ নেই। বিশেষ করে সারা বছর রোগী, বৃদ্ধ ও নারীদের যাতায়াতে কষ্ট লেগে থাকে। ভাঙা সড়ক দিয়ে সাধারণত পুরুষেরা কষ্ট হলেও যাতায়াত করেন। কিন্তু নারী, কলেজ ছাত্রী, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা সেবা পেতে এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দাদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ৭ বছরের দূর্ভোগের অবসানে একনেক অনুমোদিত সড়ক সংস্কার প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরী।
প্রসঙ্গত, শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ সদরে যাতায়তের একমাত্র পথ টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক। বিগত ২০১২ সালের জুন মাসে প্রবল সাগরের জোয়ারে আঘাতে বেড়িবাঁধটি বিলীন হয়ে যায়। অরক্ষিত বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে সড়কের হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫.১৫ কিলোমিটার অংশ বিলীন হয়ে যায়। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে সড়কের ওই অংশে নৌকা নিয়ে কষ্টে যাতায়াত করে আসছিল।
(সওজ) সূত্র জানায়, টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ সংস্কারের জন্য ৬৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গত ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্প অনুমোদনের দীর্ঘ এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, টেকনাফের-সাবরাং হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫.১৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারের জন্য ৬৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গতবছর একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল। প্রকল্পটির দরপত্র একদফা বাতিল হয়েছে, দ্বিতীয় দফায় একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছেন। দরপত্রটি সুপারিশ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশ কমিটি অনুমোদন দিলে কাজটি দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে।