টেকনাফ বাহারছড়ায় পানের বরজে কাজ করতে গিয়েই স্কুল শিক্ষার্থীসহ অ*প*হৃ*ত-২ ; সহোদর র*ক্তা*ক্ত

লেখক: হুমায়ুন রশিদ
প্রকাশ: ৩ years ago

হুমায়ূন রশিদ / আজিজ উল্লাহ : টেকনাফের বাহারছড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে পানের বরজের কাজ করতে গিয়েই পাহাড়ি স্বশস্ত্র দূবৃর্ত্তদের হাতে স্কুল শিক্ষার্থীসহ চাচা-ভাতিজা অপহরণের শিকার হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড় থেকে লাফ দিয়ে ৩জন ফিরে আসলেও অপহরণকারীদের হামলায় রক্তাক্ত দুই কৃষক সহোদরকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়,৩০এপ্রিল (রবিবার) সকাল ৮টারদিকে উপজেলার উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরাস্থ মাঠ পাড়া পাহাড়ে বাঁচা মিয়ার পুত্র রহিম উদ্দিন (৩০), সরওয়ার আলম (৪৫), সরওয়ার আলমের পুত্র এবং জাহাজপুরা মডেল একাডেমীর দশম শ্রেণীর ছাত্র রিদুওয়ান (১৯), ইউছুপের পুত্র আব্দুল আমিন (৩২) ও আব্দুল্লাহ (৩১) পৃথকভাবে পানের বরজের পান তুলতে এবং কৃষি কাজ দেখা শুনা করতে যায়। হঠাৎ দা-কিরিচ এবং অস্ত্রাদি নিয়ে একদল পাহাড়ি স্বশস্ত্র দূবৃর্ত্ত দল তাদের ঘেরাও করে মাদারবনিয়া খাল হয়ে গভীর পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার পথে জিরি এলাকা হতে বাঁচা মিয়ার পুত্র সরওয়ার আলম (৪৫) প্রাণ রক্ষার্থে লাফ দিয়ে গভীর খাদে পড়ে কোন প্রকারে পালিয়ে যায়। একই কায়দায় ইউছুপের পুত্র আব্দুল আমিন (৩২) ও আব্দুল্লাহ (৩১) পালানোর চেষ্টা করলে দূবৃর্ত্ত দল তাদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করলেও কোন প্রকারে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। পাহাড়ি দূবৃর্ত্ত দলের কোপে রক্তাক্ত ইউছুপের পুত্র আব্দুল আমিন (৩২) ও আব্দুল্লাহ (৩১) কে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

অপরদিকে দূবৃর্ত্ত দলের হাতে অপহৃত বাঁচা মিয়ার পুত্র রহিম উদ্দিন এবং সরওয়ার আলমের পুত্র ও জাহাজপুরা মডেল একাডেমীর দশম শ্রেণীর ছাত্র রিদুওয়ানের মুক্তির জন্য ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছে বলে জানা গেছে।

অপহৃত স্কুল ছাত্রের পিতা ও দূবৃর্ত্ত দলের কবল থেকে ফিরে আসা সরওয়ার আলম জানান, আমি ঝুঁকি নিয়ে কোন প্রকারে বেঁচে আছি। এখন আমার ছেলেকে কিভাবে উদ্ধার করব। তাদের মুক্তির জন্য ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করছে। আমার হাতে একেবারে খরচের টাকা পর্যন্ত নেই। আমার স্কুল পড়–য়া ছেলেকে অক্ষত অবস্থায় দ্রæত উদ্ধারের জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এই ব্যাপারে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান সংবাদ কর্মীদের জানান,উক্ত এলাকা দিয়ে ২জন অপহরণ এবং দুই সহোদরকে রক্তাক্ত করার খবর পেয়ে পুলিশের বিশেষ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তাছাড়া হোয়াইক্যং ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ বাদশা মিয়া এবং স্থানীয় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, দমদমিয়া বেত বাগান এলাকায় দূবৃর্ত্ত দলের অপহরণ ও মুক্তিপণ আতংকে ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দিতে টেকনাফ যাচ্ছে খুব ভয়ে। উক্ত স্থানে থানা পুলিশ অথবা বিজিবির বিশেষ টহল মোতায়েনের জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর আন্তরিক সহায়তা কামনা করেছেন।

এদিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং,হ্নীলা,টেকনাফ সদর ও বাহারছড়া ইউনিয়নের কয়েকটি প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিনিয়ন অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা জনমনে চরম ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলেও সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি ভবিষ্যতে আরো অপরাধ প্রবণ করে তুলতে পারে। তাই আইন-শৃংখলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে দূর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলে মনে করেন সচেতন মহল। ####