মোঃ আশেকউল্লাহ ফারুকী, টেকনাফ |
টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের নাইট্যং পাড়া উঠনী এলাকা হতে কুলাল পাড়া জীপ স্টেশন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কের বেহল অবস্থা বিরাজ করছে। এ সড়ক দিয়ে উভয় পথে আসা একটি যানবাহন অন্যটিকে সহজে পাশ কাটাতে পারেনা। উঠনী নামক পাহাড়ী এলাকায় সড়কটি সংকোচিত হওয়ায় অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এ সড়ক দিয়ে যাত্রীরা অতিঝুঁকি মাথায় নিয়ে যাতায়াত করে আসছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতার ৪৭ বছরে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে দৃশ্যমান উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। এ সড়কটি দিয়ে ছোট বড় ডজনের বেশী প্রকারের যানবাহন ও পরিবহন যাতায়াত করে আসছে। বিকল্প কোন প্রকার সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে এ পথে আসতে হয় যাত্রীদের। বর্ষা মওসূমে পাহাড় ভেঙ্গে পড়ে উঠনী সড়কে এবং যানবাহন ও পরিবহন বিকল হয়ে পড়লে অনেক সময় উভয় পথে আসা বাস ও ট্রাক জ্যামে পড়ে। উঠনী নামক সড়ক হতে টেকনাফ মডেল থানার দক্ষিনে কোলালপাড়া শাহপরীরদ্বীপ সড়ক পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশ্বের সড়ক ভাংগন, অবৈধ স্থাপনা, যত্রতত্র স্থানে গাড়ী পাকিং, সড়কের পার্শ্বে ইটবালি, গৃহনির্মান সামগ্রীর ব্যবসা চলে। টেকনাফ পৌর ষ্টেশনে সড়কের পার্শ্বে কাঁচাবাজার ও মাছ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় অনেক সময় যানজাটের সৃষ্টি হয়। পথচারীরা ও ভোক্তারা জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে যাতায়াত করে আসছে। টেকনাফ হাসপাতাল, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, ভূমি অফিস উপজেলা প্রশাসন ও নাইট্যং পাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাংগন ও খাদে পরিনত হওয়ায় সড়কটি সংকোচিত হয়ে পড়লে যাত্রীরা ও পথচারীরা এ সড়ক দিয়ে নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারেনা। এ সড়ক দিয়ে সকাল বিকাল ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, হাসপাতালের রোগী, এনজিওকর্মী ছাড়াও সেবা প্রার্থীরা এ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে যাতায়াত করে থাকলেও অনেক সময় যানজাটের নাকালে পড়ে। এ সময় স্কুল, অফিস ও হাসপাতাল মূখি যাত্রী ও পথচারীরা যানজাটের কবলে পড়ে এবং অনেক সময় সঠিক সময়ে কর্মস্থলে বা প্রতিষ্ঠানে পৌছতে পারেনা। এসময় জঠিল রোগীরা পড়ে যায় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফে ১২ লাখ রোহিঙ্গা ১৫টি আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করার ফলে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন ও পরিবহন সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলে এ সড়কের যানবাহনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। টেকনাফ একটি পর্যটন এলাকা এবং বছর ব্যাপী দেশী বিদেশী পর্যটক আগমন করে থাকে। পর্যটকেরা সড়কের বেহাল অব্স্থা দেখে তারা হতাশা ও নিরাশা হয়ে ফিরে যায়। পরে তারা আসতে চায়না। সড়ক ও জনপদ বিভাগ সুদুর ৮৬ কিঃ মিটার দুরে কক্সবাজার থেকে এর নিয়ন্ত্রন করছে। টেকনাফ শাপলা চত্ত্বরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালিকানাধীন উপ-সহকারী প্রকৌশলী কার্যালয় থাকলেও প্রকৌশলী থাকেন কক্সবাজারে। কোন দিনও উপসহকারী প্রকৌশলীকে টেকনাফে এই জন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দেখা মেলেনি। কার্যসহকারী মোস্তাক আহমদ এ দপ্তরে দায়িত্বে নিয়োজিত থাকলেও অনেক সময় তাকে প্রয়োজনে দপ্তরে পাওয়া যায়না। তার মাধ্যমে সড়ক, সেতু, নির্মাণ ও মেরামত কাজ করে আসছে। টেকনাফ পৌর শহরের ভগ্নদশা সড়কটি মধ্যে মধ্যে মেরামত করলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই পূনরায় আগের মত হয়ে যায়। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, ষ্টেশনে ও ভূমি অফিসের ভগ্নদশা সড়ক দিয়ে রিক্সা আরোহী যাত্রী ও রোগীরা ঝাঁকুনীতে অনেকেই কোমরে ব্যথা এবং জঠিল রোগে শিকার হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়ার সাথে ফোনে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, বিভিন্ন জঠিলতার কারণে সড়কের নির্মাণ এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেধের বিলম্ব হচ্ছে। এ সমস্যা নিরসন হলে শিগ্রী সড়কের উন্নয়ন ও মেরামত কাজ শুরু হবে।
উপজেলা আওমীলীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মো. আলী বলেন, টেকনাফ একটি পর্যটন ও পৌর শহর, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টেকনাফ পৌর শহরের ভিতর সড়কটি নির্মাণ ও সংস্কার অতীব প্রয়োজন।